এ যেন সিনেমার চিত্রনাট্য! দু'জনেই একসময় একই দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনে নিজের এলাকায় প্রবেশের অনুমতি ছিল না তাঁর। স্ত্রীর হাত ধরেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়েছিলেন। একসঙ্গে দিয়েছিলেন কত ছবি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আচমকাই ভোলবদল। স্ত্রী গেলেন শাসক দলে। রাজনৈতিক লড়াই পৌঁছাল সাংসারিক কোন্দলে। পরিস্থিতি পৌঁছাল বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায়।
হ্যাঁ, কথা হচ্ছে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan) এবং সুজাতা মণ্ডলকে (Sujata Mondal) নিয়ে। দু'জনের মধ্যে চলছে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা। এবার সৌমিত্র খাঁ-র বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন সুজাতা মণ্ডল। তিনি বলেছেন, বাঁকুড়া আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন তাঁকে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই মামলা বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত হোক। সুজাতা মণ্ডলের অভিযোগ খতিয়ে দেখে আদালত এই কথায় সায় দিয়েছে। বাঁকুড়া থেকে মামলা শিয়ালদহতে স্থানান্তরিত হয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বক্তব্য, স্বামী-স্ত্রী পৃথক দলের সদস্য হলেও তাঁদের রাজনৈতিক ময়দানের লড়াই গৃহযুদ্ধে তো পৌঁছায়নি। এরকম অজস্র উদাহরণ আছেই। কিন্তু এক্ষেত্রে এমনটির কারণ কী? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, রাজনৈতিক মতপার্থক্য যে সম্পর্ক ভাঙনের কারণ হতে পারে, এই ঘটনা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। সম্পর্ক এতটাই তিক্ততায় পৌঁছেছিল যে তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে কটূক্তি করতেও পিছপা হননি। পরিস্থিতি পৌঁছায় বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত।
এই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় সুজাতা মণ্ডলের স্পষ্ট অভিযোগ, বাঁকুড়াতে মামলা চলাকালীন একাধিক বার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। সৌমিত্র খাঁ-র বাড়ির লোকজনের কাছে তিনি নির্যাতনের শিকার। পাল্টা সৌমিত্র খাঁ-র দাবি, পুরোটাই মিথ্যে। বাঁকুড়াতে থাকলই না, তাহলে নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক চাপানউতোর চলতেই থাকে, কিন্তু তা যে সুখী গৃহকোণেও প্রধান বাধা হয়ে উঠতে পারে, তা সৌমিত্র খাঁ এবং সুজাতা মণ্ডলের কাহিনি থেকে স্পষ্ট।