শীতলকুচি কাণ্ডে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসামাত্রই এবার চাপের মুখে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ১০ এপ্রিল যে গুলি চলেছিল সেই গুলির আঘাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাদের মৃত্যুর অন্য কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় হলো, একজনের আবার সেই গুলি পিঠে লেগেছিল। যদি আত্মরক্ষার জন্যই গুলি চালাতে হয় তাহলে গুলি পিঠে লাগে কি করে? এই প্রশ্নই বর্তমানে ঘুরপাক খাচ্ছে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। তার পাশাপাশি সামিউল মিঁয়ার শরীরে ভারী বস্তুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সাথেই আছে স্প্লিন্টারের ক্ষত সেই আঘাত লাগল কি করে?
শুধু তাই নয়, আরো বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর বিষয় উঠে এসেছে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে। রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, আলম মিঁয়া এবং মঈনউদ্দিন মিঁয়ার শরীরে গুলি লেগেছে সোজাসুজি বুকে। তৃণমূলের তরফে একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল যেখানে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলছিলেন 'বুক লক্ষ্য করে গুলি চালাও'। সেই সময় বিজেপি দাবি করেছিল ওই ক্লিপ ২০১৯ সালের। কিন্তু পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সামনে আসার পর দেখা যাচ্ছে, দুজনের বুকে সত্যিই গুলি লেগেছে। ফলে নতুন করে সেই অডিও ক্লিপ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। নিয়ম অনুযায়ী যদি ব্যক্তি মাত্র ১০ মিটারের দূরত্বে অবস্থান করেন তাহলে কিন্তু গুলি চালানোর কথা পা লক্ষ্য করে। কিন্তু তাহলে প্রশ্ন উঠছে, কেন ওই দুই জনের বুকে গুলি লাগলো? সিআরপিএফ দাবি করেছিল, সেদিন কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছে বলে গ্রামে কেউ গুজব রটিয়ে দিয়েছিল। তারপর গেরস্থালির জিনিসপত্র এবং লাঠিসোটা নিয়ে গ্রামবাসীরা হামলা চালায়। কিন্তু উন্মত্ত গ্রামবাসীদের রুখতে গুলি চালাতে হয়েছিল সিআরপিএফকে। কিন্তু এই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সিআরপিএফের দাবিকে কিছুটা হলেও খণ্ডন করছে। এখনো বাকি তিন দফার ভোট গ্রহণ। তার আগে শীতলকুচি কাণ্ডের এই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হয়ে উঠেছে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারের অন্যতম বড় একটি হাতিয়ার।