কেবল সন্দেহের বশেই কি এ কাণ্ড? নাকি এর পেছনে ছিল ঠান্ডা মাথায় খুনের চক্রান্ত? বর্ধমানের কেতুগ্রামের ঘটনায় ধরা পড়েছেন মূল অভিযুক্ত রেণু খাতুনের স্বামী শের মহম্মদ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে একাধিক তথ্য। পুলিশি জেরায় শের মহম্মদ জানিয়েছেন, রেণুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। যা তিনি মেনে নিতে পারেননি। প্রতিশোধস্পৃহা থেকেই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। সেদিনের সেই রাতের কথা মূল অভিযুক্ত শের মহম্মদ স্বীকার করেছেন। সঙ্গে থাকা বন্ধুদের কথাও প্রাথমিক জেরায় উঠে এসেছে।
সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় শের মহম্মদের গলায় ছিল একরাশ অনুশোচনা। তাঁর স্পষ্ট দাবি, রেণুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সরকারি চাকরি পেলে তাঁকে ছেড়ে চলে যেত। যদিও রেণু স্পষ্ট জানিয়েছেন, এরকম কোন ঘটনাই ছিল না। চাকরি পাওয়ার কথা প্রথম তিনি নিজের স্বামীকেই জানিয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কে কোন সমস্যা ছিল না। এমনকী দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করার সময় শের মহম্মদ রেণুর সঙ্গেই থাকতেন। আশপাশের প্রতিবেশীদের বয়ান অনুযায়ী, রেণুর সঙ্গে শের মহম্মদের কোন ঝামেলার কথা কখনোই তাঁরা শোনেননি।
ঘটনার দিন শের মহম্মদ তাঁদের বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢোকেন। সঙ্গে নাকি দুই বন্ধু ছিলেন। যদিও পুলিশি জেরায় আর কেউ জড়িত আছে কী না তার খোঁজ চলছে। ঘরের মধ্যে ঢুকে প্রথমে ঘুমন্ত রেণুকে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁর চিৎকার বন্ধ করা হয়। রেণুর হাতের কব্জি টিন কাটা কাঁচি দিয়ে চেপে ধরা হয়। তারপর দা দিয়ে কোপ মারা হয়। সেই সময় রেণুর শ্বশুর শাশুড়ি কোথায় ছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
কেবল সন্দেহের বশেই কি এই ঘটনা? শের মহম্মদের দাবি, রেণুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। দুর্গাপুরে থাকাকালীন নাকি তা হয়। যদিও রেণুর দাবি এরকম কিছুই হয়নি। তাঁর শের মহম্মদকে ছেড়ে যাওয়ার কথা একবারও মনে হয়নি। কিন্তু এই ঘটনার পর রেণু শের মহম্মদের কঠিন শাস্তি চান, কারণ শের মহম্মদ তাঁকে খুনই করতে চেয়েছিল। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেণুর পাশে দাঁড়িয়েছেন। রেণুর চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এমনকী রেণুর কৃত্রিম হাত লাগানো যায় কী না সেই বিষয়টিও দেখা হচ্ছে। এককথায় রেণু কাণ্ডের তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।