আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা অনেক আগেই উত্তরবঙ্গকে একটি পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার নিরিখে সরব হন। ঠিক অব্যবহিত পরেই জঙ্গল মহলকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে সোচ্চার হন সৌমিত্র খাঁ। শাসক দলের সাথে তথা বিজেপির অন্দরেও বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে সংঘাত প্রকাশ্যে আসে। তোলপাড় হয় বঙ্গ রাজনীতি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বার্লার দাবিতে অনড় থেকে বলেন উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহল পৃথক রাজ্য হলে তাতে ভুল কিছু নেই। আর দিলীপের এই মন্তব্যের জেরেই বিজেপির অন্দরে ফের একবার মতপার্থক্য সামনে এল। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন পৃথক রাজ্য গঠন বা বঙ্গভঙ্গ, এসব বিজেপির নীতির বিরুদ্ধে। তারা একে কখনোই সমর্থন জানাননি। হুগলির সাংসদ লকেট চট্টপাধ্যায়ও সেই সুরেই বলেন, "বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। বাংলার সংস্কৃতি, বাঙালির বিচার সম্পূর্ণ অন্য রকম। জন বার্লা বা দিলীপ ঘোষ কী বলেছেন, জানি না! তবে এই বাংলা কখনওই বিভক্ত হবে না।"
যদিও পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি যখন ওঠে তখন বিজেপির অনেকেই সহমত পোষণ করেননি। দিলীপ ঘোষও তাদেরই মধ্যে একজন। তবে এদিন দিলীপবাবু জলপাইগুড়িতে বার্লার সাথে থেকেই বলেন, "আজ যদি জঙ্গলমহল বা উত্তরবঙ্গ আলাদা হতে চায়, তার সব দায়-দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে জিইয়ে রেখে মুখ্যমন্ত্রী চুক্তি সই করেছিলেনে, তখন কেন প্রশ্ন ওঠেনি? এখন আমরা আওয়াজ তুললেই বিচ্ছিন্নতাবাদী হয়ে গেলাম? জন বার্লা যদি এখানকার মানুষের আওয়াজ তুলে থাকে, তাহলে ক্ষতি কী? তারা যদি দাবি করে থাকে তাহলে অস্বাভাবিক কিছু নয়। পার্টির একটা স্ট্যান্ড আছে সেটা পার্টি পরে ভেবে দেখবে।" যদিও পরে আবার পুরোনো সুরেই বলেন,"দলের সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে। না গোর্খাল্যান্ড, না উত্তরবঙ্গ। কোনও রাজ্যের ব্যাপার নেই। শ্যামাপ্রসাদের বাংলাকেই আমরা সোনার বাংলা করব।" আরও বলেন, "উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহল পৃথক রাজ্য হলে তার সমস্ত দায়দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিতে হবে।"
বিজেপির অন্দরে এই মতদ্বন্দ্ব দেখে কুনাল ঘোষ বলেন, ওদের নেতারা উত্তরবঙ্গে থাকলে একরকম কথা বলেন, কলকাতায় আরেকরকম। ভোটের স্বার্থেই দ্বিচারিতা চালাচ্ছে বিজেপি। রজ্যভাগের এই চক্রান্ত বাংলার মানুষ কখনোই মেনে নেবেনা বলেও জানান তিঁনি।