একুশে নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টারস্ট্রোক ছিল দুয়ারে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। এই প্রকল্পের মধ্যেই সকল রাজ্যবাসীর জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। কিন্তু ফের রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের ব্যর্থতা সামনে এল। এবার বেসরকারি নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকায় চিকিৎসার গাফিলতির খবর প্রকাশ্যে এলো। ঘটনাটি কোলাঘাটের। কোলাঘাটের কলা গ্রামের বাসিন্দা সমর মাইতি গত শনিবার তীব্র শ্বাসকষ্ট ও কিডনির সমস্যা নিয়ে উলুবেড়িয়া সেবাব্রত হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হয়। সেখানে তার পরিবার বিনা পয়সায় যাতে চিকিৎসার পরিসেবা প্রায় তাই এলাকার বিডিও মদন মন্ডল রবিবার জরুরি ভিত্তিতে কাজ করে ওই ব্যক্তির পরিবারের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেয়। কিন্তু জানা গিয়েছে পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখার পরে সেবাব্রত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করার চাপ সৃষ্টি করে। পরে ওই রোগীকে আইসিইউ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এমনকি যতদিন ভর্তি ছিল তার খরচ হিসাবে ৪৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করার পর ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
মৃত ব্যক্তির পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখার পরই ওই সেবাব্রত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আর চিকিৎসা দিতে চায়নি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখানোর আগে ওই ব্যক্তির ডায়ালিসিসের সমস্ত ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল নার্সিংহোমে। কিন্তু কার্ড দেখানোর পরে ওই ব্যক্তিকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চাপ সৃষ্টি করা হয়। পরিবারের তরফ থেকে প্রশাসনের কাছে দাবি করা হয়েছে যাতে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ঘটনা প্রসঙ্গে কোলাঘাটের বিডিও মদন মন্ডল বলেছেন, "ঘটনাটা শুনে খুবই খারাপ লাগছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কোন সুবিধা দেয়নি সমর মাইতিকে। ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে।" অন্যদিকে সেবাব্রত হাসপাতালে ডিরেক্টর দীপক দাস বলেছেন, "আমাদের কিডনি চিকিৎসা না থাকায় আমরা রোগীকে রেফার করেছি। আর কাউকে রেফার করা হলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কোন সুবিধা দেওয়া হয় না। তাই ৪৫ হাজার টাকার বিল নেওয়া হয়েছিল রোগীর পরিবার থেকে।"