একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) আগে একাধিক প্রথম শ্রেণীর তৃণমূল নেতা দলের প্রতি বিদ্রোহী হয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন যে বাংলায় গেরুয়া শিবির সরকার তৈরি করলে তাঁদের নতুন রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে বিপুল মার্জিনে বাংলায় জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। তারপর থেকেই এখন নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে পুরনো দলে ঘর ওয়াপসি করা। একাধিক দলবদলু নেতা তৃণমূলে ফিরে আসার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সেই তালিকাতেই নাম দিয়েছেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। তিনি ফেসবুকে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করে গেরুয়া শিবিরের কাজের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে লিখেছেন, "সমালোচনা তো অনেক হল। মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও যশ এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।" তাঁর এই বক্তব্যে একপ্রকার এটা ঠিক যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্র সরকারের বারংবার হস্তক্ষেপ ও বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদী একদমই পছন্দ না রাজীবের। তবে তৃণমূলের প্রতি এমন সমর্থন দেখাতেই ডোমজুড়ের একাধিক এলাকায় পোস্টার পরেছে যাতে লেখা আছে, "বাংলায় ও ডোমজুড় এলাকায় মীরজাফর এবং গদ্দারের কোনও জায়গা নেই।" এছাড়াও কিছু পোস্টারে দেখা গিয়েছে, "তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, দলে তাদের কোন ঠাঁই নেই।" আসলে রাজীবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছেন অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা। তারাই রাজীবকে আর তৃণমূল শিবিরে দেখতে চায় না।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্য সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বলেছেন, "কথায় বলে না, দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না। যখন মুখ্যমন্ত্রীর নামে বাজে কথা বলেছিল তখন ভাবা উচিত ছিল। এখন মিষ্টি মধু মাখা কথা বলে আর লাভ হবে না। অনেক সময় ডেভিল চার্চে গিয়ে ভালো কথা বলে। তাতে তারা সৎ হয়ে যায় না।" অন্যদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি বিরোধী কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেছেন, "৪২ হাজার ভোটে হারার পর এসব কথা মনে পড়ল? ভোট-পরবর্তী হিংসার সময় কোথায় ছিলেন? আপনি নীরব না থেকে বিজেপি কর্মীদের পাশে থাকলে ভাল হয়। নাহলে গাড়ির পিছনে যে ছবিটা আছে সেটা আবার সামনের সিটে নিয়ে আসুন।" এক কথায় দুই দলের সাঁড়াশি আক্রমণে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।