একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Elections) আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছিলেন যে তৃণমূল (TMC) ক্ষমতায় এলে বিধান পরিষদ গঠিত হবে। নির্বাচনের আগে দেওয়া কথা রাখলেন তিনি। প্রথম বিধানসভা অধিবেশনেই এই বিল পেশ করা হবে এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এই প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে। আগামী ২ তারিখ রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার মধ্যেই বিধানসভায় বিধান পরিষদ বিল আসছে বলে আজ অর্থাৎ সোমবার একটি সর্বদলীয় বৈঠক (All Party Meet) করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। কিন্তু কি এই বিধান পরিষদ? কেন্দ্রীয় আইন সভায় যেমন লোকসভা এবং রাজ্যসভা দুটি কক্ষ থাকে, ঠিক তেমনি রাজ্য আইনসভাতে দুই কক্ষের নিয়ম রয়েছে সংবিধানে। আইনসভার নিম্নকক্ষ বিধানসভা এবং উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদ নামে পরিচিত। কোন রাজ্য চাইলে এই বিধান পরিষদ অবলুপ্ত করতে পারে বা তৈরি করতে পারে। সেক্ষেত্রে সংবিধানের সংশোধন অত্যন্ত জরুরী।
সর্বদলীয় বৈঠকের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থেকে জানিয়েছেন, "আগামী ২ জুলাই রাজ্যপাল ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু করবেন। তার পরের দুই দিন অর্থাৎ ৩ ও ৪ জুলাই ছুটি থাকবে। ৫ ও ৬ জুলাই রাজ্যপালের ভাষণের ওপর ভিত্তি করে বিতর্ক হবে। তারপর আগামী ৭ জুলাই বাজেট পেশ হবে। তারপরের দিন ৮ তারিখ বিধান পরিষদ তৈরীর প্রস্তাবে গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করা হবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের ভাষণ তৈরি করে রাজভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
তবে আজকের সর্বদল বৈঠকে সকলে উপস্থিত থাকলেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) উপস্থিত না থাকে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন জল্পনার সৃষ্টি করেছেন। তিনি বিধানসভায় আসলেও সর্বদল বৈঠক এড়িয়ে যান তিনি। তিনি সকালে বিজেপি পরিষদীয় দলের একটি বৈঠকে বসেন। কিন্তু তারপর সর্বদল বৈঠক এ ছিলেন না। এই প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, "সর্বদল বৈঠকে বিরোধী দলনেতার উপস্থিতি কাম্য ছিল। তিনি থাকলে ভাল হত। কারণ এই বৈঠকেই বিধান পরিষদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।" এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েও শুভেন্দু কেন সর্বদল বৈঠক এড়িয়ে গেল তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে বঙ্গ রাজনীতিতে।
অন্যদিকে সর্বদল বৈঠক ডাক পেলেন না আইএসএফ দলের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন, "আমার কাছে আজকের সর্বদলীয় বৈঠক নিয়ে কোনো খবর নেই। কোন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি আমাকে। তাই উপস্থিত থাকার প্রশ্নই আসে না। এটা কেন হল তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। আমরা মাননীয় স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়ে পুরো বিষয়টা জানতে চাইবো।" একুশে নির্বাচনে বাম কংগ্রেসের সাথে আইএসএস জোট করে নির্বাচনে লড়েছিল। বাম কংগ্রেস খাতা খুলতে না পারলেও আইএসএফ ভাঙ্গর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে একটি আসন পায়। এখন প্রশ্ন উঠছে তিনি একমাত্র বিধায়ক হওয়ার জন্য কি তাকে সর্বদলীয় বৈঠকে ডাক দেওয়া হল না?