দুর্গাপুজোর সময় মন্ডপে মন্ডপে উদ্বোধনের সময়েই শেষবার দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপর আজ মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ সফরে। কিন্তু কেন এতদিন দেখা মেলেনি তাঁর? সে বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ জানালেন, "আমার ঠান্ডা লেগেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টির মাঝেও পুজোর উদ্বোধন করেছি, প্রায় ৪৬০টি ক্লাবের। গলা বসে গিয়েছিল, কথা বলতে পারছিলাম না। এখনও কথা বলতে গেলে কাশি হচ্ছে।"
নিজের অসুস্থতার কথা বলতে গিয়ে তিনি এদিন বলেন, "প্রায় ২০ বছর ধরে জ্বর হয়নি। কাজ করে গিয়েছি। কিন্তু আমার যখন ঠান্ডা লাগে, বেশিই লেগে যায়।" এরপরেই রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, "পুজোর আনন্দ, উদযাপন আছে, তবে কোভিড কিন্তু এখনও আছে। তা থেকে সাবধানে থাকবেন। তারপর এই ঋতু বদলের সময়টায় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াও দেখা যাচ্ছে নানা জায়গায়। সেসব থেকেও সতর্ক থাকতে হবে। কোনও কিছুই অবহেলা করলে চলবে না।"
এদিন শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে নিজের ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সেই ১২-১৩ থেকে বয়স থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। এত ছোট বয়স থেকে রাজনীতি কেউ করেছে কিনা জানি না! আমার বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। বাবার কাছ থেকে শুনে শুনে মাথার মধ্যে দেশপ্রেমের উদ্ভব হয়ে গিয়েছিল। স্বামীজি, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, নেতাজি-কে জেনেছি। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, ইসাই, জৈন, শাই একটা সর্বধর্মের আইডিয়া হয়ে গিয়েছিল।"
তারপর থেকে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে সারাটা জীবন পার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "সারা শরীরে এত ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় এখনও বেঁচে আছে, স্বাধীনতার পর যদি এমন কাউকে দেখতে পান আমি আমার এই কথা ফিরিয়ে নেব। একমাত্র আমি যাঁকে আপনারা জীবন্ত লাশ বলতে পারেন। আমার হাতে দুটো হাতে অপারেশন হয়েছে। তিনবার অপারেশন হয়েছে পেটে। মার খেতে খেতে আমার ব্রেন অপারেশন হয়েছে। আমার চোখ, পা অপারেশন হয়েছে। শরীরের কোনও অংশ বাকি নেই। তা সত্ত্বেও মনের জোরে কাজ করে চলি।"