সম্পত্তি কেন্দ্র করে বিবাদ এবং পারিবারিক অশান্তিকে কেন্দ্র করে এক প্রৌঢ়কে বিষ খাইয়ে খুন করল তাঁরই স্ত্রী এবং ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের বেলাদণ্ড গ্রামে। ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সূত্রের খবর, মৃতের নাম সুবোধ মণ্ডল (৫৬)। তিনি পেশায় কৃষক। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত পরোপকারী স্বভাবের মানুষ ছিলেন সুবোধবাবু। কারোর কোনও অসুবিধা হলেই তৎক্ষণাৎ ছুটে যেতেন তিনি। সে কারনে এলাকাবাসীর কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাই পারিবারিক অশান্তির জেরে এভাবে তাঁর অকালমৃত্যুকে কোনোমতেই মেনে নিতে পারছেন না গ্রামের অধিবাসীরা।
একই অভিযোগ মৃতের বৃদ্ধা মা আশালতা দেবীরও। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের বিয়ে হয়েছে ২৮ বছর। তবে বিয়ের শুরু থেকেই মিল ছিল না স্বামী-স্ত্রীর। আশালতা দেবী থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই জানিয়েছেন, বাড়িতে রোজ চলত অশান্তি। অশান্তির কারন, সম্পত্তিজনিত বিবাদ। জানা গিয়েছে, সুবোধবাবুর স্ত্রী পূর্ণিমা মণ্ডল বিয়ের পর থেকেই নিজের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য জোর করতেন। যদিও এই দাবী মেনে নেননি সুবোধ। আর এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই নিত্য অশান্তিতে জড়াতেন তাঁরা। তবে শুধু মা-ই নয়, ইদানিং মায়ের প্ররোচনায় সুবোধবাবুর উপর চাপ সৃষ্টি করত তাঁর ছেলে চন্দনও, এমনটাই উঠছে অভিযোগ।
একাই রান্না করে খেতেন সুবোধ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার অশান্তি চরমে ওঠে। অভিযোগ, দুপুর বেলায় বাড়ির মধ্যে আটকে রেখে জোরপূর্বক সুবোধবাবুর মুখে বিষ ঢেলে দেন তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে। খবর ছড়িয়ে পড়তে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান প্রতিবেশীরা। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে সুবোধবাবুকে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে। তবে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাঁকে। আজ সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
এদিকে সুবোধবাবুর মৃত্যুর খবর শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্ত স্ত্রী এবং ছেলের কঠোরতম শাস্তির দাবী করতে থাকেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ। তবে তার আগেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত স্ত্রী এবং ছেলে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।