জগদ্ধাত্রী পুজোয় (Jagadhatri Puja)দিতে হবে বিসর্জনের অনুমতি। সেই সঙ্গে এলাকার ঐতিহ্য সাঙের সুযোগ। কোভিড পরিস্থিতির জেরে মেলেনি প্রশাসনের অনুমতি। অগত্যা এলাকাবাসীর পথ অবরোধ। দাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে পথ অবরোধের বৈধ অধিকার থাকলেও তার জেরে যদি কারোর মৃত্যু হয় সে দায় কাদের? পথ অবরোধের জেরে এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। গ্রেফতার করা হয়েছে জনা পাঁচেক অবরোধকারীদের, কিন্তু যে মায়ের কোল খালি হল, সে শূন্যতা পূরণ হবে কি? এমনই প্রশ্ন তুললেন ওয়াকিবহাল মহল।
নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য জগদ্ধাত্রী পুজো। প্রতি বছর ঘটা করে তা পালন করা হয়। পুজোর থেকেও বেশি চমক থাকে বিসর্জনকে কেন্দ্র করে। সেই সঙ্গে আর এক ঐতিহ্য হল সাং। কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী ভাসানে দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য বেহারাদের কাঁধে বওয়া বাঁশের মাচা বা সাঙে প্রতিমা বহন। প্রায় সমস্ত প্রতিমাকে শোভাযাত্রা করে রাজবাড়ির সামনে থেকে ঘুরিয়ে আনা হয়। এই রীতি দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। তবে কোভিড পরিস্থিতির জেরে বদলেছে নিয়ম। এবারেও হাইকোর্টের নির্দেশে প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি। কিন্তু সাধারণ মানুষ তা মানবেন কেন? কাল থেকেই শুরু হয় পথ অবরোধ। অবরোধ পৌঁছায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। টায়ার জ্বালিয়ে গতকাল থেকেই চলছিল তীব্র প্রতিরোধ।
সূত্রের খবর, এই অবরোধের জেরে যানজটে আটকে পড়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স। আর এই অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতর ছিল বছর সাতেকের এক শিশু। বাবা-মায়ের আকুতি মিনতিতেও ছাড়া হয়নি সেই অ্যাম্বুল্যান্স বলে অভিযোগ। প্রায় ঘন্টা পাঁচেক আটকে থাকার পর শিশুটির মৃত্যু হয় বলেও খবর। এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা কৃষ্ণনগরবাসী। ঘটনার পর প্রশাসনের তরফে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্র মারফত খবর।
মালদহ থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে আসছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কৃষ্ণনগরের পিডব্লিউডি মোড়ে আটকে যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি। পুলিশের তৎপরতায়ও সরানো যায়নি অবরোধ। যার জেরে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর। উৎসবকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনায় ইতিমধ্যেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।