'বাংলা ও বাঙালি বিরোধী', 'বহিরাগত' ইত্যাদি নানা বাণে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের বিদ্ধ করেছে বাংলার শাসকদল। চুপ থাকেনি বিজেপিও। বরং এবারের নির্বাচনে বাংলা ও বাঙালির আবেগকে কাজে লাগিয়ে জয়ের মুখ দেখতে মরিয়া তারাও। ইতিমধ্যেই নানা সভাস্থল থেকে বাংলায় ছন্দ কেটে কথা, রবিঠাকুরের কবিতা, টুইটারে বাংলা টুইট ইত্যাদি নানাবিধ উপায়ে বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাইছেন মোদী-শাহরা। তবে মাতৃভাষা বাংলা না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বাংলা উচ্চারণে গলদ থেকেছে অনেক। সে নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় ট্রোল-মিমের ছড়াছড়ি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারংবার তার বক্তৃতা থেকে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা উচ্চারণকে কটাক্ষ করেছেন। এবার সেই নিয়েই বেশ কিছু মনের ভাব ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী।
হাওড়ার জনসভা থেকে তিঁনি বলেন, "আমি যখন যেখানে যাই সেখানকার ভাষা বলার চেষ্টা করি। কেরালায় গেলে মালায়লাম বলি, তামিলনাডুতে গেলে তামিল বলি। বাংলায় এলে বাংলাতে বলি। আমার বাংলা উচ্চারণে ত্রুটি থাকতেই পারে, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি কারণ বাংলা ভাষাকে আমি সন্মান করি। দিদি, আপনার তো উৎসাহ দেওয়া উচিত।" রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে খানিক ব্যঙ্গ করেই বলেন, "হেরে যাবেন উনি, সেই হতাশা থেকেই আমায় গালি দিচ্ছেন, বাংলার এ কোন চিত্র প্রদর্শন করছেন তিনি?" একই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেন যে আগে ইংরেজিতে চিঠি লেখা হলেও এখন তিঁনি প্রধানমন্ত্রী হবার পর থেকে আঞ্চলিক ভাষায় চিঠি লেখালেখি শুরু হয়েছে। সাংসদ ও মুখ্যমন্ত্রীদের জন্মদিনে তাদের মাতৃভাষায় চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানানোর রেওয়াজ শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিনে তাকে বাংলায় শুভেচ্ছাবার্তা দেন মোদী আর এর জবাবে গুজরাটি ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মমতা যা দেখে খুবই খুশি হন প্রধানমন্ত্রী। "এটাই ভারতবর্ষের বিশেষত্ব", উল্লেখ করেন মোদী।
যদিও ভুল উচ্চারণ করেও প্রশংসা দাবি করাকে একেবারেই অমূলক বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা। তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ স্পষ্ট বলেন, "মোদী টেলি প্রম্পটারে রোমান হরফ দেখে বাংলা বলেন বলেই এই বিপত্তি।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর জানান, ‘‘ভুল উচ্চারণ করলে যে মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগে সেটা প্রধানমন্ত্রীর মনে রাখা উচিত।’’