স্বপ্ন ছিল তাঁদের শিক্ষক হওয়ার। জীবনের পাঠশালায় শিক্ষা দিলেও স্কুলঘরের ক্লাসরুমে শিক্ষা দেওয়ার ইচ্ছেটাই এতদিন ছিল অধরা। চাকরি পাওয়ার কথা ছিল ১৯৯৬ সালে, কিন্তু নিয়োগপত্র হাতে পেলেন ২০২১-এ। কাদের বয়স ৫০, আবার কাদের বয়স ৫৬। মেরেকেটে কেউ পাঁচ বছর, আবার কেউ চার বছর চাকরি করবেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় একজন নিয়োগপত্র হাতে পেলেন ৫৯ বছর ৩ মাস বয়সে অর্থাৎ চাকরি করবেন মাত্র ৯ মাস। আদালত আর প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চক্করে কেটে যায় জীবনের একটা বড় সময়। তবে শেষ হাসি ফুটল সেই মানুষগুলির।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তরফে তেমনই ১১ জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হল। বাম আমলে চাকরি প্যানেলে সংরক্ষিত তালিকায় নাম ছিল অশোক কুমার গড়াই, মেনকা মুন্ডা, বলরাম বসন্ত প্রমুখ ১১ জনের। কিন্তু তাঁদের বঞ্চিত করে সাধারণ প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। মামলা চলে বছরের পর বছর। আদালতের চক্কর কাটতে কাটতেই তাঁদের জীবনের একটা বড় সময় কেটে যায়। এরপর ২০১৭ সালে আদালতের নির্দেশে তাঁদের চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়। যদিও জেলা প্রাথমিক সংসদের গড়িমসিতে নিয়োগ আটকে যায়। ফের তাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হন। অবশেষে জয় আসে এবং হাতে পান নিয়োগপত্র।
জেলা প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান কৃষেন্দু বিষই এসেই এই মানুষগুলির হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন বলে খবর। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে চাকরি প্রার্থীদের আনন্দের শেষ নেই। জল ভরা চোখে জানালেন সেই খুশির খবর। মাত্র ৯ মাস চাকরির সুযোগ পেলেন মেনকা মুন্ডা। দীর্ঘদিন আদালতে চক্কর কেটেছেন, বারবার ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু আশা ছাড়েননি। তাই শেষ সাফল্যে চোখে জল। জানালেন, এই দিনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। সকলের হাতে জেলা প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান নিয়োগপত্র তুলে দেন, মিষ্টিমুখ করান।