রাজ্যে গ্রুপ ডি (Group D) কর্মী নিয়োগ কি মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh) বছর কয়েক আগে ঘটা ব্যাপম কেলেঙ্কারিকেও ছাড়িয়ে যাবে? অন্তত গতকাল সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর এমনই এক চাঞ্চল্যকর কথা আলোচনার শীর্ষে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই কেলেঙ্কারির কথা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আলোচনা চলছিল। কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) এসএসসির (SSC) ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হয়ে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আর তারপর থেকেই জোর জল্পনা ঘটনার প্রকৃত সত্য প্রকাশ্যে এলে এ ঘটনা বিজেপি শাসিত রাজ্য মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারিকেও ছাড়িয়ে যাবে।
দিন কয়েক আগেই হাইকোর্টে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের মামলা শুরু হয়। দেখা যায় প্যানেলের সময় অতিক্রান্ত হলেও অন্তত ২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমনকী বেশ কয়েক মাস ধরে সেইসব কর্মী বেতনও পাচ্ছেন। এ অভিযোগ আসতেই হাইকোর্ট তাঁদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেয়। ঘটনায় দেখা যায় কেবল ২৫ নয়, এমন ৫০০ জনেরও বেশির নামে এমন অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের লম্বা তালিকা দেখে আদালত রীতিমতো থ। কমিশনকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, কোন সময় দেওয়া হবে না। সেই দিনের মধ্যে সমস্ত তথ্য জমা দিতে হবে। প্রয়োজনে সিআরপিএফ, পুলিশ দিয়ে অফিস ঘিরে রাখা হবে যাতে কোন তথ্য নষ্ট করতে না পারে কমিশন। আর তখনই গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্তের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় মজার ব্যাপার হল কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে এই বেআইনি নিয়োগ কমিশন সুপারিশ করেনি। যদিও এই মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ গোটাটাই চাপিয়েছে কমিশনের ঘাড়ে। এদিকে কমিশনের দাবি তারা এই নিয়োগের কোন সুপারিশ করেনি। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে কমিশন যদি সুপারিশ না করে তাহলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কীভাবে নিয়োগ দিল? তার কোন উত্তর মেলেনি। এমনকী এ কয়েক মাস ধরে সেইসব কর্মী কীভাবে বেতন পেলেন তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। আদালতে কমিশন ও পর্ষদের কথার সঙ্গে কাজের কোন মিল নেই। অনেকেই বলছেন কমিশন এখন ঘুঘুর বাসায় পরিণত হয়েছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে অনেকেই মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির সঙ্গে তুলনা করেছেন। বছর কয়েক আগে মধ্যপ্রদেশে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছিল। শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশজুড়ে। পরীক্ষায় না বসেই অনেকেই নাকি মেডিক্যালে পড়েছেন। এমনকী চিকিৎসকও হয়েছেন। যা নিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি ওঠে। এই তদন্তে দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক, সরকারি আমলা এখনও জেল খাটছেন। সেই মামলার এখনও সুরাহা হয়নি, চলছে তদন্ত। এবার রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগে এমন অভিযোগ আসার পর থেকেই অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির তুলনা টেনেছেন।
গোটা ঘটনায় রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। চাকরী প্রার্থী বেকার যুবক-যুবতীদের একাংশ দাবি তুলেছেন, কেবল গ্রুপ ডি নয় রাজ্যের সমস্ত পরীক্ষায় কেলেঙ্কারি হয়েছে। প্রাইমারি, এসএসসি, পিএসসি এমনকী ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষাতেও কেলেঙ্কারি হয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে সব কিছুই প্রকাশ্যে আসবে। এ তো ধূলিকণা মাত্র। আরও বড় কেলেঙ্কারি ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে দাবি বেকার যুবক যুবতীদের।