করোনা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে আসন্ন কালীপূজায় সমস্ত রকম বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন এক সমাজকর্মী। সেই মামলার রায়ে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, আগের বছরের মতো এবারেও কোনও বাজি পোড়ানো যাবে না। তা সে শব্দবাজিই হোক বা পরিবেশবান্ধব আতসবাজি। তবে সোমবার সেই রায় কার্যত নাকচ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এদিন সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের রায়ে জানালেন, সব বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। নিয়ম মেনে পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়াতেই পারেন নাগরিকরা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর রোশনি আলি নামে জনৈক সমাজকর্মী আসন্ন কালীপূজায় সমস্ত রকম বাজি নিসিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টে। ২৯ তারিখ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের অবসরকালীন বেঞ্চে হয় সেই মামলার শুনানি। মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানান, কালীপূজায় কোনও বাজি, এমনকি পরিবেশবান্ধব বাজিও পোড়ানো যাবে না। একই নির্দেশ দেওয়া হয়, আসন্ন ছটপুজা এবং জগদ্ধাত্রি পুজার জন্যেও। রায়ের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় জনসাধারণের মধ্যে। কেউ হাইকোর্টের রায়ের প্রসংশা করেন তো কেউ উগরে দেন ব্যক্তিগত ক্ষোভ। আদালতের রায়ে বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ হন বাজি বিক্রেতারা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকেও রায়দান করে জানানো হয়েছিল, বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ। এবিষয়ে তাঁদের মন্তব্য ছিল, আনন্দ, উৎসবের কারনে কোটি কোটি নাগরিকের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করার সুযোগ দেওয়া হবেনা। তবে দিন চারেকের মধ্যেই মত পাল্টালেন তাঁরা। এদিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হল, যে সমস্ত স্থানের বাতাসে দূষণের মাত্রা ‘মধ্যম’, সেখানে ফাটানো যেতে পারে পরিবেশবান্ধব বাজি। এবিষয়ে তাঁদের সরাসরি নির্দেশ, ‘এই রায় সব রাজ্যের জন্যই প্রযোজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ তার বাইরে পড়ে না’। গত বছর কালীপূজায় করোনা পরিস্থিতির কারনে বন্ধ ছিল সমস্ত রকমের বাজির ক্রয়-বিক্রয়। এবছর নতুন করে আশা দেখতে শুরু করেছিলেন বাজি বিক্রেতারা। এর মাঝেই হাইকোর্টের আচমকা রায়ে আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁদের মাথায়। তবে অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় খারিজ করায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন অনেক ব্যবসায়ীই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।