রবিবার ৯ জানুয়ারি পূর্বকালের সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান করোনাভাইরাস গ্রাফ। শনিবার যেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০,০০০ এর কিছুটা বেশি সেখানে রবিবার মাত্র ১ দিনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলেন ২৪,২৮৭ জন। গতবারের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যেখানে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ২০,৮৪৬ সেখানেই রবিবারের আক্রান্তের সংখ্যা এক দিনেই বৃদ্ধি পেল ৩৪ শতাংশ। কলকাতাসহ রাজ্যের একাধিক জেলায় সংক্রমনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে চোখে পড়ার মতো।
স্কুল-কলেজ যেখানে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ, সেখানে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএসসি, এমএসসি সহ একাধিক পরীক্ষার সময়সূচি। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহণ করা হচ্ছে পরীক্ষা অনলাইন ভাবে। এমনকি এমবিবিএস এবং বিএসসি নার্সিং এর মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সময়সূচী ও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেকাংশে। কিন্তু সেখানেই প্রশ্ন উঠলো জিএনএম নার্সিং পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে। সম্প্রতি, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় তরফ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে, জিএনএম নার্সিং পরীক্ষার সময়সূচী বদল না করে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তাও আবার অফলাইনে। যেখানে, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সময়সূচি এতটা বদল করা হয়েছে, সেখানে জিএনএম নার্সিং পরীক্ষা কিভাবে অফলাইনে গ্রহণ করা হচ্ছে, তাও আবার এই সময় তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন জিএনএম নার্সিং পড়ুয়ারা।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একাধিক আবেদনপত্র জমা দেওয়া সত্বেও অভিযোগ উঠেছে, পড়ুয়াদের সমস্যা নিয়ে কোনোরকম ভ্রুক্ষেপ করেনি এ বিশ্ববিদ্যালয়। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করলেন জিএনএম নার্সিং পড়ুয়ারা। তাদের অভিযোগ, জিএনএম নার্সিং পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত, অনেকের শরীরে করোনা ভাইরাসের সিমটমস রয়েছে। এই অবস্থায় কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব, তাও আবার অফলাইনে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পড়ুয়ারা। জনৈক এক পড়ুয়ার দাবি, 'বর্তমানে তাদের হোস্টেল থেকে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি যারা করোনাভাইরাস পজিটিভ রয়েছেন তাদেরকেও জোর করে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে।'
তাদের দাবি, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি স্কুল কলেজ এবং সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, ডাক্তারি এবং বিএসসি নার্সিং এর মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যেখানে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে জিএনএম নার্সিং পরীক্ষা অফলাইনে নেওয়া কিভাবে সম্ভব? শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পাশাপাশি তাদের উপরে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে পরীক্ষার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি অনেকের। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তাদের আর্জি, যাতে অন্তত কিছুদিনের জন্য তাদের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হোক, নতুবা তাদের পক্ষে এই মুহূর্তে অফলাইনে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি।