করোনাভাইরাস এর প্রভাব এখনো পর্যন্ত কাটেনি তাই এইবারের পুজো ও হতে চলেছে সেই আগের মতই। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো গতবছরের পুজো মণ্ডপ বাইরে থেকে দেখতে হয়েছিল। অনেকেই মনে করছেন এবারেও সেই একইভাবে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হবে বাঙালীকে। বাইরে থেকে প্রতিমা দর্শন বাঙালির মনের মত হয় না কোন দিন। তাছাড়াও, বাইরে থেকে যাতে লোক দেখতে পারে সেই জন্য অনেকটা খোলামেলা প্যান্ডেল করতে হয়েছিল উদ্যোক্তাদের। ভালোভাবে পুজো না করতে পারায় কিছুটা দুঃখিত ছিলেন উদ্যোক্তারাও। কিন্তু এবারে তারা একটি অন্য পথে হাঁটার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। ফোরাম ফর দুর্গোৎসব এবার একটি নতুন ভাবনা নিয়ে সামনে এসেছে যেখানে করোনাকালে বিকল্প পদ্ধতিতে দুর্গা পুজো করার একটি পরিকল্পনা তারা গ্রহণ করছে।
এবছর এমন মণ্ডপসজ্জা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে দূর থেকে ঠাকুর দেখতে পারেন সমস্ত দর্শনার্থীরা। তারা জানিয়েছে যতটা পারবেন খোলামেলা মন্ডপ করবেন, ঢাকি, ক্লাব কর্তা সবার আগে ভ্যাক্সিনেশন করানো অত্যন্ত প্রয়োজন বলেও তারা জানিয়েছেন। করোনাভাইরাস কালে আলাদাভাবে পুজো করার একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তারা। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেই পরিকল্পনা এক নজরে।
প্রথমেই তারা প্রচার করছেন যেন মন্ডপের বাইরের সাজসজ্জায় বেশি জোর দেওয়া হয়। ভিতরে না গিয়ে যেন পুজোর সাজ সজ্জা দেখা যায় সেটাই তাদের ভাবনা। শুধু রাতে নয় দিনের বেড়াতে যেতে মানুষ ঠাকুর দেখতে আসেন সেই জন্য প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা। তার পাশাপাশি দর্শকরা যেন সমস্ত করোনাভাইরাস বিধি মেনে মণ্ডপে ঢোকেন এবং তারা সবসময় মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন সেই বিষয়ে জোর দিয়েছেন তারা।
তার সাথে সাথেই ঠাকুরের ভোগ থেকে কাটা ফল বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মন্ডপের বাইরে দুটো স্টল পাশাপাশি না দিয়ে জায়গা ফাঁকা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তাদের পরামর্শ যেন ভিড় সামলানোর জন্য অতিরিক্ত পরিমাণ স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়। সঙ্গেই ঠাকুর বিসর্জনের সময় যেন ফিরে না হয় সেই দিকে নজর রাখার কথা বলেছেন ফোরাম ফর দুর্গোৎসব এর উদ্যোগতারা। প্যান্ডেলে ঢোকার সময় রাস্তায় ব্যারিকেড করে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্যান্ডেলের প্রবেশপথে যথেষ্ট পরিমান জায়গা রাখা এবং মণ্ডপে ঢোকার সময় সমস্ত রকম দূরত্ব বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এইবারে দুর্গাপুজোয় তাদের অন্যতম প্রধান ফোকাস হলো দুঃস্থদের সাহায্য করা। এবারে লকডাউনে সাধারণ মানুষের যা পরিস্থিতি তাতে অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে কম বাজেটে মণ্ডপসজ্জা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সেই পুজোর টাকায় দুঃস্থদের সাহায্য করার আবেদন জানিয়েছে এই ফোরাম।