একদিকে দার্জিলিংয়ের পার্বত্য অঞ্চলে ধস, আরেকদিকে উত্তাল তিস্তা নদীর জলস্তর, সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে উদ্বেগ বাড়ছে। একনাগাড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। আজ সকালে নতুন করে দার্জিলিং জেলার ধোতরে, মানেভঞ্জন, রিমবিক, গোক ও বিজনবাড়ি এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ধসের খবর এসেছে। জলপাইগুড়ির বহু এলাকা ইতিমধ্যেই জলে ডুবেছে। অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় কোনোক্রমে টিকে আছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। আবার এরই মাঝে বুধবার অর্থাৎ আজও জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
সোমবার রাত থেকেই একনাগাড়ে বৃষ্টির ফলে বিপর্যস্ত পাহাড়। বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জায়গায় ধস নামার পাশাপাশি কালিম্পং এবং গ্যাংটকগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কিছু জায়গা তিস্তার জলে কার্যত ভেসে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের আশঙ্কা, এইভাবে বৃষ্টি চলতেই থাকলে এক এক করে আরও অনেক জায়গায় ধস নামতে পারে। ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, পাঙ্খাবাড়ি এবং রোহিণী রোড খোলা থাকলেও একাধিক জায়গায় ছোট ছোট ধস রয়েছে যার ফলে আটকে পড়েছে সড়ক পরিবহণ।
ধসের পাশাপাশি এদিকে উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে তিস্তা নদীর জলস্তর বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। উপায় না দেখে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিস্তা জলাধার থেকে দফায় দফায় জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন, যার ফলে জলস্তর অনেক বেড়ে গিয়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই এলাকায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের এলাকা ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা এবং বহু জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে গ্রামের মধ্যে জল ঢুকে পড়েছে। জনজীবন বিপন্ন। তিস্তার জলে জলপাইগুড়ির সারদাপল্লি, সুকান্তনগর, মৌয়ামারি, চাঁপাডাঙা, নন্দনপুর, বোয়ালমারি, পাতকাটা প্রভৃতি এলাকা ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে এবং এই সব এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। উদ্ধারে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।