চলছে চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। আর তার মধ্যেই ঘটে গেল অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা। এমনিতেই দিনহাটা কেন্দ্র নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা লেগেই থাকে। এবার তাতে আরও ধাপ এগিয়ে সরাসরি তৃণমূলের ক্যাম্পে ঢুকে পড়লেন ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী। আর ঢুকেই ঘটালেন এক অভাবনীয় ঘটনা।
তখন দুপুর। ভোটগ্রহন চলছে। খড়দহ, দিনহাটার একাধিক কেন্দ্র থেকে উঠে আসছে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর। এমন সময় আচমকাই তৃণমূলের ক্যাম্প অফিসে ঢুকে পড়লেন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আবদুল রউফ। ঢুকেই প্রথমে সৌজন্য সাক্ষাৎ। তারপর সোজা চেয়ারে বসে চলল আড্ডা। খেলেন আখের রস, পান। গ্লাস হাতে আখের রসে চুমুক দিতে দিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতার গলা জড়িয়ে একসাথে চিয়ার্স বলতেও শোনা গেল ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীকে।
সকালে ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। বুথে বুথে ঘুরছিলেন আবদুল রউফ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আনছিলেন ভয় দেখানো, সন্ত্রাস করার অভিযোগ। এমনকি বুথে তাঁদের দলের এজেন্টদের বসতে না দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ আনছিলেন তিনি শাসক দলের বিরুদ্ধে।
যদিও দুপুর হতেই হঠাৎই বদলে গেল সম্পূর্ণ পটচিত্র। এতক্ষন ধরে যাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছিলেন, আচমকা তাঁদের সাথেই মিশে গেলেন ‘বিরোধী’ প্রার্থী। কেন এমন করলেন? প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে আব্দুলের জবাব, ‘গাড়ি করে যাচ্ছিলাম, বয়স্ক লোক বসেছিল, আশীর্বাদ নিলাম। এলাকার পূর্বপরিচিত, এখানে রাজনীতি নেই। স্রেফ সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ’। বিপক্ষ দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘এখানে পিতৃসম মানুষ আছেন। এখানের নিয়ম আলাদা। তাঁদের সঙ্গে দেখা করব না? দোয়া করবেন’।
তবে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর এহেন আচরনে বেজায় খুশি সাহেবগঞ্জের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। এবিষয়ে তৃণমূল নেতা মোজাজ্জর আহমেদ বলেন, ‘খুবই ভালো বিষয়। উনি পাশের গ্রামেই থাকেন, খারাপ কিছু নয়। এটা সৌজন্যের পরিচয়’। তবে এটি সৌজন্যই হোক বা ভাতৃত্ববোধ, অপ্রত্যাশিত এই ঘটনা যে মুখে হাসি ফুটিয়েছে শাসক থেকে বিরোধীদের, তা বলাই বাহুল্য।