সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টিপাতে জেরবার গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের অধিবাসীরা। কোথাও হাঁটু তো কোথাও কোমরসমান জমেছে জল। আর সেই জমা জলেই নিত্যনৈমিত্তিক কাজ করতে হচ্ছে মানুষজনকে। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার জমা জলে কাজ করতে নেমেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রান খোয়ালেন বেলঘরিয়ার টেক্সমেকো কারখানার এক শ্রমিক। আর এই দুর্ঘটনার পিছনে কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন কারখানার বাকি শ্রমিকেরা।
সূত্রের খবর, অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবারও টেক্সমেকোতে কাজ করতে গিয়েছিলেন বছর চল্লিশেকের সোনা রায়। বিগত কদিনের তুমুল বৃষ্টিতে জল জমেছিল কারখানা চত্বরে। অভিযোগ, বৃষ্টি কমলেও সেই জমা জল এখনও সরানো হয়নি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই জমা জলে নেমে কাজ করতে হচ্ছিল শ্রমিকদের। এদিনও সেভাবেই কাজ করছিলেন তাঁরা। এমন সময় আচমকাই জমা জলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হন সোনা রায়। ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে যান তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে সহকর্মীরা নিয়ে যান হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা সোনা রায়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার জেরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে কারখানার বাকি শ্রমিকদের মধ্যে। সহকর্মীর মৃতদেহ নিয়ে তাঁরা কারখানায় ফিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার জন্য দায়ী কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জেনেবুঝে শ্রমিকদের জমা জলে নেমে কাজ করিয়েছে, যার খেসারত দিতে হল সোনা রায়কে। এদিকে মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে এসে পৌঁছন সোনা রায়ের পরিজনরা। তাঁরাও কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তোলেন। উল্লেক্ষ্য, এই নিয়ে জমা জলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে শুধুমাত্র উত্তর ২৪ পরগনাতেই মৃত্যু হল ৮ জনের। এর আগে খড়দা, দমদম, আগরপাড়াতেও একই ঘটনার বলি হয়েছেন সাত জন। মৃতদের মধ্যে তিনজন শিশুও আছে। আর এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের নিকাশি ব্যবস্থার উপরেও।