বাংলাদেশে (Bangladesh) কোটি কোটি টাকার জালিয়াতি করা ব্যক্তি গ্রেফতার হল পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর (Ashoknagar) থেকে। এমনটাই দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক জালিয়াতি করে ফেরার ছিল অভিযুক্ত প্রশান্তকুমার হালদার। তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি এবং অর্থের নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশি গোয়েন্দাদের খবরের সূত্র ধরে গোপন অভিযান চালায় ইডি। আর তাতেই ব্যাংক জালিয়াতি ও অর্থপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক মহিলাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয় অশোকনগর থেকে।
বাংলাদেশে এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। এই চক্রের মূল মাথা ছিল প্রশান্তকুমার হালদার। সঙ্গে সহযোগী ছিলেন প্রণবকুমার হালদার এবং পৃথ্বীশকুমার হালদার। তাঁরা বিভিন্ন নামে বাংলাদেশে ২৬ টি কোম্পানি খোলেন। তারপর গাড়ি, জমি-বাড়িসহ বিভিন্ন ব্যবসা দেখিয়ে ধাপে ধাপে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেয়। তারপর ঘুরপথে টাকা তুলে হাওলার মাধ্যমে এদেশে পাচার করা হয়। ২০১৯ সালে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের নজরে এলে তদন্ত করে দেখা যায় সংস্থাগুলি শুধুমাত্র খাতায়-কলমে থাকলেও বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই।
তারপর থেকেই খোঁজ চলছিল প্রশান্তকুমার হালদারের। সম্প্রতি সূত্র মারফত বাংলাদেশের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে কোম্পানির কর্ণধার প্রশান্ত বাংলার অশোকনগরে আত্মগোপন করে রয়েছেন। এমনকি তিনি শিবশংকর হালদার নামে জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে নিয়েছেন। এই খবর ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে পৌঁছালে অশোকনগরে গোপন অভিযান চালায় ইডি। সেখানে তার বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ মেলে। আর এই কাজে তাকে সাহায্য করেছিলেন অশোকনগরের মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার মৃধা এবং তার মেয়ে ও জামাই। সবাইকেই আটক করা হয়েছে।
আপাতত ৬ অভিযুক্তকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে ৫ জনকে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অন্যদিকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন ইতিমধ্যেই প্রশান্তকুমার হালদারকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে অর্থ পাচার এবং জালিয়াতি মামলায় রুজু করে বিচার করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। সেইজন্য ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী প্রশান্তকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।