গতকাল কলকাতাসহ (Kolkata) দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় রোদ ঝলমলে আবহাওয়া থাকলেও শনিবার সকাল থেকেই মুখভার আকাশের। এর মধ্যেই শনিবার ভোর রাত থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হয়েছে ফের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ। কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিতে হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, দুই ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। এছাড়া দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে হাওড়া, হুগলি এবং বর্ধমান এই তিন জেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অপরদিকে দুর্গাপুর ব্যারেজ (Durgapur Barrage) জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
একটানা বৃষ্টিতে এমনিতেই নদী গুলির জলস্তর বেড়েছে। তার উপর দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ৭২ হাজার ২২৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। নিম্নচাপ এবং ভারি বৃষ্টির জোড়া ফলায় বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি চলছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশি রাজ্য ঝাড়খন্ডেও চলছে প্রবল বৃষ্টি। প্রবল বৃষ্টির জেরে পাঞ্চেত, মাইথন প্রভৃতি জলাধারে জলের চাপ বাড়ছে। তার জেরে দুর্গাপুর ব্যারেজে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাড়তি জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। এরফলে হাওড়া, হুগলি এবং বর্ধমানে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে গত দিন কয়েকের বৃষ্টিতে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত। আসানসোলে গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন। আসানসোলের র্যাকেট অ্যান্ড কোলম্যান এলাকায় দেয়াল চাপা পড়ে পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শিশুটির মাও। দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ নদীর জলস্তর বিপদসীমায় অবস্থান করছে। বৃষ্টি বাড়লে সুন্দরবনের নদীবাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমনিতেই ভারি বর্ষণে চাষের ক্ষতি লাগামছাড়া, তার উপর নদীবাঁধ ভেঙে জল এলে আর রক্ষে নেই। সাধারণ মানুষ প্রমাদ গুনছেন।
অন্যদিকে কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। গতকাল খুব বেশি বৃষ্টি না হওয়ায় কয়েকটি এলাকায় কিছুটা জমা জল নামলেও এখনও বহু এলাকা জলের তলায়। বিভিন্ন এলাকায় পাম্প চালিয়ে জমা জল বার করার চেষ্টা করা হলেও গঙ্গায় বাড়তি জলের চাপে জল সরতে দেরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকা এখনও জলের তলায়। বেশ কয়েকটি পুরাতন পরিত্যক্ত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর এসেছে। সব মিলিয়ে কলকাতায় জলযন্ত্রনা অব্যাহত।