একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) পর একপ্রকার ধ্বস নেমেছে গেরুয়া শিবিরে। লজ্জাজনক হারের পর একের পর এক দলবদলু নেতা তৃণমূলে যোগদান করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে সবার আগে ঘর ওয়াপসি করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা জয়ী বিধায়ক মুকুল রায় (Mukul Roy)। তাঁর তৃণমূলে (TMC) প্রত্যাবর্তন এক প্রকার সরগরম করে তুলেছিল গোটা বঙ্গ রাজনীতিকে। এই পরিস্থিতিতে দলবদলুদের নিয়ে গলায় সুর তুললেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি বলেছেন, "ভোটের আগে বিজেপিতে ১০০ জন বিধায়ক আসবে বলে গুজব ছড়িয়েছিল। এবার গুজব ছড়িয়েছে যে বিজেপি ছেড়ে ৩৫ জন বেরিয়ে যাচ্ছে। বেশি চর্বি জমে গেলে দেখতে ভালো লাগে না। চর্বি ঝরছে এটা ভালো কথা। আমরা এক্সপেরিমেন্ট করেছিলাম। খানিকটা সফল হয়েছি এবং খানিকটা হয়নি। কোনটা কাজে লাগেনি সেটা আমাদের বুঝতে হবে।"
দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি দলবদলুদের বিরুদ্ধে বা বলা যেতে পারে বিশেষ করে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে গলায় প্রথমবার সুর তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, "মুকুল রায় কোন দিনই ভোটে জেতেননি। ২০০১ সালে জগদ্দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সফল না হওয়ার জন্য আর লড়াইয়ের ময়দানে থাকে দেখা যায় তাঁকে। ২০ বছর পর বিজেপি ওঁকে টিকিট দিয়ে জিতেছিল। কৃষ্ণনগর উত্তরে মুকুল রায়ের অবস্থান বেশ ভালো ছিল। তবে সেখানে জয় মুকুল রায়ের কৃতিত্ব নয়। ওখানে যেকোনো বুথ সভাপতি লড়াই করলেও জয়ী হতেন।" এছাড়াও বিজেপির বড় ভাঙ্গনের প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, "বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং বেড়ে চলা হিংসার ঘটনাসহ রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদল আজ বিকেল ৪ টে নাগাদ রাজভবনে মাননীয় রাজ্যপালের সাথে বৈঠক করবেন।"
এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী আজ ত্রিপল চুরি কাণ্ডে আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওই মামলায় ইতিমধ্যেই শুভেন্দু নিরাপত্তারক্ষীদের জেরা করার নোটিশ পাঠিয়েছে তদন্তকারীরা। তবে সেই নোটিশ গ্রহণ করেনি শুভেন্দু নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা। এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, "এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর জন্য হেনস্থা করতে এসব করা হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীর গোডাউন থেকে ত্রিপল সরাতে হবে এমন দুর্দিন আসেনি।" এই মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টে আগেই জামিনের আবেদন করেছেন বিরোধী দলনেতা। জানা গেছে আগামী ২২ জুন এই মামলার শুনানি হবে।