বরাবরই তিনি ব্যতিক্রমী! যদিও এ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। কখনও সেই বিতর্ক আইনি গেরোয় জড়িয়েছে, তবুও তিনি 'ঝুকেগা নেহি'! হ্যাঁ, কথা হচ্ছে এই সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়কে (Debarati Mukhopadhyay) নিয়ে। বলি কিংবা টলি টাউনের কোন জনপ্রিয় নায়িকাকে নিয়েও হয়তো এত বিতর্ক হয়নি, যতটা তাঁর লেখক জীবনের স্বল্প পরিসরে হয়েছে। যদিও বরাবরই তিনি কড়া হাতেই সমস্ত মোকাবিলা করেছেন।
গতকাল রাতে আচমকাই একটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই বিষয়টি ভাইরাল হতে থাকে। তাতে বলা হয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় থ্রিলার উপন্যাস 'শিখণ্ডী', তিনি নাকি 'টুকে' লিখেছেন। এক ব্যক্তি তিনি নিজেকে একজন লেখক হিসেবেই পরিচিতি দিয়েছেন, তিনিই এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, "সম্প্রতি শুনলাম আমার বইটি থেকেই প্রায় নিয়ে নিয়ে এক ম্যাডাম বই লিখে ফেলেছেন। পাঠকেরা আপত্তি জানিয়েছেন।"
এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পর ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন মানুষ লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। রীতিমতো ছিছিক্কার পড়ে যায়। আজ সকালে বিষয়টি লেখিকার নজরে আসে। তিনি ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন। বলেছেন, "সাংঘাতিক অভিযোগ। যথারীতি প্রচুর মানুষ আমাকে সেখানে ট্যাগ, দুটো বইয়ের কোনটিই না পড়ে আমাকে নিয়ে ছিছিক্কার শুরু করে দেন। আমি বিষয়টি জানতে পারি ঘন্টাখানেক আগে, ভয়ংকর মানের মিথ্যা অভিযোগ।"
আশ্চর্যের বিষয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের এমন পোস্টের পরেই কাকতালীয় ভাবে সেই ব্যক্তির পোস্ট রীতিমতো ভ্যানিশ। এই প্রসঙ্গে লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায় তাঁর ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, "এই কমেন্টটি করার কয়েক মিনিটের মধ্যে লেখক তাঁর গোটা পোস্টটি মুছে দিলেন। আমি হতবাক! আপনি যদি সৎ থাকেন, পোষ্টটা মুছলেন কেন? যতক্ষণ অবধি লোকে আমায় নিয়ে কুমন্তব্য করছিল, তিনি উপভোগ করছিলেন, কিন্তু আমার উত্তরের পরই তড়িঘড়ি মুছে দিলেন কেন? কেনই বা অন্যকে অপমান করে এভাবে নিজে হাইলাইটেড হওয়ার চেষ্টা করলেন?"
এই প্রথম নয়, এর আগেও এমন বহুবার হয়েছেন। বারবার লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। আর বরাবরই তিনি অত্যন্ত শক্ত হাতে সমস্ত ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। কোন রাখঢাক নয়, সরাসরি জবাব দিয়েছেন। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা ঘটেনি। নিজেকে একজন লেখক বলে দাবি করা মানুষের এহেন মন্তব্য তিনি মেনে নিতে পারেননি। নিজেই বলেছেন, "ওই লেখক বয়সে অনেক বড়, তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা থাকবে, কিন্তু তিনি নিশ্চয়ই এই সত্যটি জানেন যে, অন্যকে ছোট করে নিজে বড় হওয়া যায় না। কেউ কোনদিন হতে পারেনি।"
ইতিমধ্যেই সেই প্রকাশনা সংস্থা তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তাঁদের স্পষ্ট জবাব, "সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট আমাদের নজরে এসেছে যেখানে আমাদের প্রকাশনা সম্পর্কে মনগড়া, অযৌক্তিক এবং সম্মানহানিকর কিছু কথা বলা হয়েছে। একটি প্রকাশনা কোন বই করবে, কেন করবে অথবা কোন বই করবে না তা সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট প্রকাশনার। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লেখকদেরও তা সময়ে সময়ে জানানো হয়।" এখানেই শেষ নয়, সেই প্রকাশনা সংস্থা আরও জানিয়েছেন, "কোনো প্রকাশনা বা বই সম্পর্কে মনগড়া, অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন মন্তব্য করার আগে ভবিষ্যতে যে কোনো সুচিন্তক ব্যক্তি আরেকটু সচেতন হবেন, এটুকুই কাম্য।"