কিছুদিন আগেই শেষ হয়ে গেল ২০২১ এর কলকাতা পৌরসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রত্যাশিত ভাবে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আবারো মেয়র হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। ১৪৪ এর মধ্যে ১৩৪ আসনে ফুটেছে ঘাসফুল, উড়েছে সবুজ আবির। কিন্তু, তৃণমূলের জয় নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব না থাকলেও সকলকে চমকে দিয়ে এই নির্বাচনে দুর্দান্ত কামব্যাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। বিজেপি কে পিছনে ফেলে ভোটের নিরিখে কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামফ্রন্ট। '৭২ কিংবা '৭৭ নিয়ে একাধিক লেখালেখি, 'পলিটিক্স বোদ্ধাদের' রাজনৈতিক চিন্তাধারার স্বরূপকে যদি একটু সরিয়ে রেখে একেবারে সাধারণ মানুষের রাজনীতির বোধ বুদ্ধি দিয়েও বিচার করি, তা হলেও এটা কিন্তু মানতেই হবে, রেড ভলেন্টিয়ারদের নব প্রজন্মই নতুন করে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এর মুজাফফর আহমেদ ভবনে।
পথ চলা এখনো অনেক বাকি। আগামী জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে গোটা রাজ্য জুড়ে পৌরসভা নির্বাচন, যার দিকে নজর রয়েছে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের। তার কথা মাথায় রেখেই শনিবার থেকে বর্ধমান বামফ্রন্ট শুরু করলো সিপিএমের জেলা সম্মেলন। বড়দিনের সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। টাউন হলে আয়োজিত এই সভায় আগামী দুদিনের জন্য পরবর্তী পৌরসভা নির্বাচনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করার কাজ করবে বামফ্রন্ট। প্রকাশ্যে সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সেটা আর করা হয়ে ওঠেনি, তাই অগত্যা বর্ধমান টাউন হলে আয়োজিত করা হয়েছে সম্মেলন। সূত্রের খবর, কলকাতার মডেল কাজে লাগিয়ে বর্ধমান থেকেও নতুন প্রজন্মকে তুলে আনার এবং নিজের হারানো জায়গা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করবে বামফ্রন্ট।
সূর্যকান্ত মিশ্র বলছেন, "কলকাতা পুরভোটে দলের কম বয়সী নেতৃত্বকে প্রার্থী করে আমরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছি। বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। অধিকাংশ বোরোতে আমরা রয়েছি দ্বিতীয় স্থানে। বাকি পুরসভাগুলির নির্বাচনের রণকৌশল প্রস্তুতি হবে নির্দিষ্ট জেলায় জেলায়। তৈরি করা হবে আগামী নির্বাচনের প্রচার, জনমত সংগ্রহ এবং ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল।" তবে শুধুমাত্র যে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য সূর্যকান্ত এসেছিলেন তা কিন্তু নয়। বীরভূমের ডেউচা পাচামির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও সূর্যকান্ত কটাক্ষ করলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। সূর্যকান্তের বক্তব্য, "এখানকার কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকার যা বলছে, তা সম্পূর্ণ স্পষ্ট না। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আন্দোলন শুরু করেছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। আর তাদের পাশে থাকবে রাজ্য সরকারের বহিরাগত তকমাপ্রাপ্ত বামফ্রন্ট কর্মীবর্গ।"