রাজ্যের একাধিক নিয়োগে একের পর এক সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছে আদালত। কেবল নিয়োগ ক্ষেত্র নয়, ভোট পরবর্তী হিংসা-সহ একাধিক মামলায় পরপর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। পরিসংখ্যান বলছে গত ১০ মাসে অন্তত ১২ টি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যার সাম্প্রতিকতম সংযোজন ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট সংক্রান্ত নিয়োগ। ২০১৭ সালে প্রাথমিকে দ্বিতীয় দফার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে আদালত ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের সুপারিশ করেছে। এই নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
এদিন তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যের প্রতিটি যুবক যাঁরা চাকুরিপ্রার্থী, তাঁরা এটা বুঝে গেছেন, পিএসসি, সিএসসি, এসএসসি, বন দফতর, গ্রুপ ডি, টেট সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হচ্ছে। নিয়োগ নেই, নিয়োগ বন্ধ। যা নিয়োগ হচ্ছে তাতে ৮০ ভাগ দুর্নীতি। এই দুর্নীতির হাত অনেক লম্বা। এই দুর্নীতি কালীঘাট থেকে নবান্ন পর্যন্ত বিস্তৃত।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগে দুর্নীতির কথা বারবার বলে আসছেন একাংশ। কখনও মেধা তালিকায় নাম নেই, অথচ নিয়োগ, কিংবা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চাকরি গেছে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। সেই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের এক অঙ্কের শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সুপারিশ করেছে আদালত। আর গতকাল প্রাথমিকে একসঙ্গে ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের সুপারিশ করল আদালত। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে প্রাথমিকে দ্বিতীয় দফা নিয়োগের সিবিআই তদন্ত আদেশ দিয়েছে আদালত। বারবার নিয়োগের ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, যেকোন ব্লকে গিয়ে খোঁজ করলে দেখা যাবে অনেকেই চাকরি পেয়েছে, যাদের ওয়েবসাইটে নাম নেই। কবে পরীক্ষায় পাশ করল কেউ জানেই না। উপেন বিশ্বাস খ্যাত 'রঞ্জন' রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেই আছে। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেছেন, যারা পরীক্ষায় পাশ করেছে, তারা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ করছে, আক্রান্ত হচ্ছে, আর যারা টাকা-পয়সার খেলা খেলছে, তারা সব নিশ্চিন্তে থাকবে? ওদের শাস্তি হবে না?
রাজ্যের একাধিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই তদন্ত চলছে। উঠে এসেছে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য। মেধা তালিকায় নাম নেই, অথচ নিয়োগ, কখনও নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রুপ ডি, এসএসসি, টেটের নিয়োগে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সরব হয়েছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।