ফের এক নক্ষত্রপতন। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটলো বাংলা সংগীতের স্বর্ণযুগের। শিল্পীর প্রয়াণে রীতিমতো শোকস্তব্ধ সংগীতমহল। পাশাপাশি কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর পেয়ে উত্তরবঙ্গ সফরে মাঝপথে ছেড়েই কলকাতায় ফিরছেন তিনি। আজ তিনি কোচবিহারে ছিলেন। গীতশ্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে কলকাতায় প্রশাসনিক কর্তাদের সাথে কথা বলে নিজের কর্মসূচিতে কাটছাঁট করে কলকাতায় ফিরছেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন, আগামীকাল বুধবার সরকারি তত্ত্বাবধানে হবে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য।
সঙ্গীতশিল্পীর প্রয়াণে স্মৃতি রোমন্থন করে মুখ্যমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "ছেলে মানুষের মতো ছিলেন সন্ধ্যাদি। আমায় যখনই ফোন করতেন, তখনই বলতেন একটা গান শোনাতে। আমি বলতাম দিদি আপনি গানের দিশারী। আমি আপনার সামনে কখনও গান গাইতে পারি কি? কিন্তু তিনি ছিলেন নাছোড়বান্দা। তাই তাঁকে ফোনেই গান শোনাতে হতো।" এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, "জন্মদিনে নিয়ম করে ফোন করতেন কাছের দিদি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আমায় খুব ভালোবাসতেন। সংগীতজগতের বড় ক্ষতি হয়ে গেল তাঁর প্রয়াণের মাধ্যমে। তাঁর অসুস্থতার পর থেকেই বড় উদ্বিগ্ন ছিলাম। নিয়মিত খবর নিতাম। কিন্তু কাল রাতেই খবর এসেছিল যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি যে এত কিছু ঘটে যাবে, ভাবতে পারিনি।"
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি হৈমন্তী শুক্লা শোক প্রকাশ করে জানিয়েছেন, "শিল্পীদের কাছে তিনি অভিভাবকসম। সাক্ষাৎ সরস্বতী তিনি। এই শূন্যতা আর কখনও পূরণ হবে না। অনেক কিছু শিখেছি ওনার থেকে। তবে এইসব শিল্পীদের প্রয়াণ হয় না। মানুষের মনে সারাজীবন বেঁচে থাকবেন গীতশ্রী।" এছাড়া মাধবী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, "রোজই তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতাম। তবে গতকাল নিতে পারিনি। আজকে এই খবর শুনে আমি কি বলবো জানি না। ওনার মৃত্যু দিয়ে সমাপ্তি হল বাংলা সঙ্গীত জগতের স্বর্ণযুগ।" এছাড়াও একাধিক তারকারা গীতশ্রীর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করে টুইট করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথম এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তারপর শারীরিক অবনতি হলে, তাঁকে অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর থেকে নিয়মিত চিকিৎসা চললেও শেষ পর্যন্ত সমস্ত চেষ্টাই ব্যর্থ হল। চলে গেলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।