আবারও একজন প্রতারকের সন্ধান মিলল আসানসোলে। এবারের প্রতারক আবার কখনো পুলিশ অফিসার কখনো হিউম্যান রাইটসের আধিকারিক আবার কখনো ভুয়ো সাংবাদিক। বিভিন্ন আই কার্ডের সরকারের লোগো ব্যবহার করে জালিয়াতি করেছে এই জালিয়াত যার নাম মুন্না ডোম, ওরফে এম কে সিং ওরফে রোহিত মল্লিক। চিত্তরঞ্জন এর বাসিন্দা এই ব্যক্তি সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে, কাউকে আবার সিবিআই অফিসার সেজে ব্ল্যাক মেইল করে বহুদিন ধরে আর্থিক প্রতারণা করেছে। তারপরে একদিন হঠাৎ করে সে আসানসোল থেকে পালিয়ে গিয়ে সরাসরি ঘাঁটি গাড়ে ঝাড়খন্ড দুমকা। সেখানে গিয়ে বহুদিন ধরে ম্যাজিস্ট্রেট সেজে রাস্তায় তোলাবাজি করেছিল সে। কিন্তু বাইক আরোহী এবং গাড়িচালকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় এই ব্যক্তি। অনেকেই ধরতে পেরে যান এই ব্যক্তি আসলে একজন জালি ব্যক্তি এবং তারাই এই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
খবর পেয়ে দুমকা আদালত থেকে ছয় দিনের প্রোডাকশন ওয়ারেন্টে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসে চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ। পুলিশ এখানে নিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তার কাছ থেকে নকল সিবিআই অফিসার এর কার্ড, নকল প্রেস কার্ড, নকল পুলিশের লাঠি এবং মানবাধিকার কমিশনের কার্ড উদ্ধার করে পুলিশ। অনেকে দাবি করেছেন তার একটি চারচাকা গাড়ি রয়েছে যেখানে পুলিশের লোগো ছিল। বর্তমানে পুলিশ ওই চারচাকা গাড়ির সন্ধানে হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ইতিমধ্যেই বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এই মুন্না। চিত্তরঞ্জনের বাসিন্দা প্রিয়া কুমারী থেকে শুরু করে আরো অনেককেই সে তার জালিয়াতির শিকার বানিয়ে ছিল। ইতিমধ্যেই চিত্তরঞ্জন এর প্রিয়া কুমারী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৫ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ ছিল, রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে তার কাছ থেকে ওই টাকা আদায় করে মুন্না। এছাড়াও চিত্তরঞ্জনের আরেক বাসিন্দা শালিনী শর্মার কাছ থেকেও রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করে মুন্না। এমনকি তাদের পরিবার থেকে আরও ২৫লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় ব্যবসা করার নাম করে। এছাড়াও মুন্নার বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে। চিত্তরঞ্জন বাজারে একটি মোবাইল দোকান এবং একটি চিকেন এর দোকান থেকে সে ৫০ হাজার টাকা ধার করেছে। ধার না শোধ করে এসে পালিয়ে যায় ঝাড়খন্ডে। এই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতেও বর্তমানে তদন্ত শুরু করেছে চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ।