বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে আবার দেশজুড়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে করোনার নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ। অথচ শারীরিক দূরত্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অবাধে চলছে হাজার হাজার জনতার রাজনৈতিক সমাবেশ। মিছিল, মিটিং, প্রতিবাদ, আন্দোলন এসব তো নিত্যদিনের রুটিন। রাস্তাঘাটে বেরোলেও মাস্ক ব্যবহারে অনীহা এখনো আগের মতই। ভ্যাকসিন আসায় আবার অনেকেরই পাত্তা না দেওয়া মেজাজ। এরই মাঝে ভোটের প্রচারে জনতার দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন দলীয় প্রার্থীরা। ভোটারদের সাথে হাত মেলানো, আলিঙ্গন তো রয়েছেই, শিশুদের কোলে তুলে আদর-চুম্বনও বাদ পড়েনি। সেলিব্রেটি প্রার্থী হলে তো কথাই নেই! সেলফির আবদার মেটাতে গায়ে গায়ে ঘেঁষাঘেঁষি, ঠেলাঠেলি। প্রার্থীরাও 'মানুষের কাছে' পৌঁছে যেতে কোথাও খামতি রাখছেন না। তবে এবার করোনা মহামারীর চোখরাঙানিকে মাথায় রেখে এইসব কর্মকাণ্ডে ইতি টানতে চলেছে নির্বাচন কমিশন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে কলকাতার নানা এলাকায়। শারীরিক সংস্পর্শ এড়াতে প্রার্থীরা তৎপর না হওয়ায় নিয়মনীতি প্রতিষ্ঠা করে আসরে নামল খোদ কমিশনই। প্রার্থীরা যদি বিধি ভঙ্গ করে ফের ভোটারদের সাথে এইরূপ শারীরিক সংস্পর্শে আসে তাহলে শাস্তি হিসেবে প্রার্থীপদ খোয়ানোই শুধু নয়, মহামারী আইন অনুযায়ী দু বছরের জন্য শ্রীঘরে ঠাঁই হতে পারে ওই প্রার্থীর। একইসাথে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানাও দিতে হতে পারে প্রার্থীকে। ইতিমধ্যেই জারি করা এই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাচারের ক্ষেত্রে ৫ জনের বেশী কর্মী বা সমর্থক রাখা যাবে না। বাধ্যতামূলকভাবে সাথে রাখতে হবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার।
রোড শো'র ক্ষেত্রেও চাপানো হল বিধিনিষেধ। নিরাপত্তারক্ষীর গাড়ি বাদে রোড-শোয় পাঁচের বেশি গাড়ি একসঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না এবং এই পাঁচ গাড়ির একটি কনভয়ের সঙ্গে পরেরটির বেশ কিছুটা দূরত্ব থাকতে হবে। রাজনৈতিক জনসভার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি জমায়েত করা যাবে না। এমন মঞ্চ নির্বাচন করতে হবে যেখানে প্রবেশ ও প্রস্থানের আলাদা পথ রয়েছে। মুখ্য নির্বাচনী অধিকারিক স্পষ্ট জানান, প্রার্থীও করোনা বিধির বাইরে নয়, করোনা ছড়ানো রুখতে রাজনৈতিক দলগুলোরও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।