গত বছর আম্ফান ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়েছিল এরাজ্যের জনজীবন। আর তার মাঝেই শাসক শিবিরের নামে দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে ত্রান ‘চুরি’র অভিযোগ এনেছিলেন বেশ কিছু মানুষ। সেই ত্রান দুর্নীতি নিয়েই রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় কলকাতা উচ্চ আদালত। যদিও রাজ্যের পেশ করা রিপোর্টে একেবারেই না-খুশ বিচারকমণ্ডলী।
ঘটনার সূত্রপাত আম্ফান বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রান সামগ্রী পাঠানো নিয়ে। পাঁচটি ট্রাকে প্রায় দু’কোটি টাকার ত্রান সামগ্রী পাঠানো হয় বসিরহাট ২ নম্বর ব্লকের ঘোরারস কুলীন গ্রামে। তবে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের কাছে না পৌঁছে স্থানীয় পঞ্চায়েত উপপ্রধান সাম্বিল হোসেনের গোডাউনে মজুদ করা হয়েছে ত্রাণসামগ্রী। সম্প্রতি দুদফায় সেই ত্রাণসামগ্রী পাচার করা হয়। প্রথম দফায় দুটি ট্রাক এবং দ্বিতীয় দফায় তিনটি ট্রাককে পাচার করার চেষ্টা করা হয়। তবে এই দুর্নীতি হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা মাটিয়া পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। আর এবিষয়েই কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠান রাজ্যের কাছে। এদিন আদালতের সামনে রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য।
রাজ্যের পাঠানো রিপোর্ট দেখে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল। রাজ্যের তরফ থেকে দেওয়া রিপোর্ট গ্রহন না করে তিনি জানান, এসব রিপোর্ট কেবলমাত্র আদালত এবং মানুষকে আইওয়াশ করার জন্য দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে পুলিশ, সে বিষয়ে কিছুই লেখা নেই রিপোর্টে! এতো বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে দুর্নীতি কিছুতেই মেনে নেবে না আদালত। রাজ্যের কাছে আগামী ২৭শে সেপ্টেম্বর পুনরায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।