ইতিমধ্যেই নতুন বছর শুরু হতে না হতেই এক লাফে বেড়ে গিয়েছে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। তার মধ্যেই আবার আর কয়েক দিনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। রাজ্য সরকারের তরফে প্রথমে জানানো হয়েছিল গঙ্গাসাগর মেলা অনুষ্ঠিত হবে সময়মতো। কিন্তু সেই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মন্ডল। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, এইরকম একটি পরিস্থিতিতে সব দিক বিচার করে মেলার আয়োজন সম্ভব? নাকি নয়, সেই মর্মে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক রাজ্য সরকার।
চিকিৎসক অভিনন্দন মন্ডল দাবি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল এই মেলায় বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ একত্রিত হয়ে থাকেন। প্রায় তিরিশ লক্ষের বেশি জনসমাগম হয়। তাই এইরকম একটা পরিস্থিতিতে, কোনভাবেই দূরত্ব বৃদ্ধি এবং করোনাভাইরাস প্রটোকল মেনে চলা সম্ভব নয়। একই পরিমাণ ভিড় হলে আবারও গোষ্ঠী সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করেছিলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মন্ডল চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে আখেরে সমস্যা রোগীদের হবে বলে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের কাছে দাবি করেছেন চিকিৎসক অভিনন্দন মন্ডল। তার আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে রাজ্যের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে মঙ্গলবার।
আজকের শুনানিতে রাজ্যে তরফে আইনজীবিকে প্রশ্ন করা হয়, মেলার আয়োজনের জন্য কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে রাজ্য সরকার? কত ভীড় হবে বলে মনে করছে রাজ্য? হাইকোর্টের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, করোনাভাইরাস এর বাড়বাড়ন্তে কলকাতা তথা রাজ্য পুলিশের অনেকেই আক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে কি ভাবছে রাজ্য সরকার? সেই মেলায় নিরাপত্তার জন্য যে পুলিশকর্মীরা নিয়োজিত হবেন তারা যদি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন তাহলে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার? যদিও, আইনজীবী বিপরীতে প্রশ্ন করেন, গত বছর যখন করোনা পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয়েছিল, তাহলে এবারে কেন নয়? গতবছর ততক্ষণে দেশে টিকাকরণ শুরু পর্যন্ত হয়নি, এবারে টিকাকরন শুরু হয়েছে কিন্তু তাহলে বাধা দেওয়ার কারণ কি? যদিও হাইকোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছে রাজ্যের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, তাই বৃহত্তর স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপদেশই দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে।