বুধবার রাতে এক ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনার (Bus Accident) সাক্ষী থাকল গোটা বাংলা। রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবোঝাই বাসটি নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) রায়গঞ্জ থানার রূপাহারের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ঘটনা। সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গা থেকে একদল পরিযায়ী শ্রমিক ঝাড়খণ্ড থেকে লখনউ-এর দিকে যাচ্ছিলেন। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী অন্তত ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, গুরুতর আহত ৩। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
সূত্রের খবর, বুধবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ রায়গঞ্জের রূপাহারের কাছে স্থানীয় মানুষ একটি প্রচন্ড জোর আওয়াজ শুনতে পান। গিয়ে দেখেন একটি যাত্রীবোঝাই বাস নয়ানজুলিতে পড়েছে। তৎক্ষনাৎ পুলিশ এবং দমকলে খবর পাঠানো হয়। তার আগেই সাধারণ মানুষ উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সঙ্গে এসে পৌঁছায় এনডিআরএফের স্পেশাল টিম। শুরু হয় উদ্ধার কাজ। রাতের অন্ধকারে চলতে থাকে। অনেককেই উদ্ধার করা হলেও কতজন বাসে কাদার মধ্যে আটকে পড়েছেন বোঝা সম্ভব হয়নি। এরপর ক্রেন দিয়ে বাসটি উপরে তুলতেই দেখা যায় সেই ভয়াবহ দৃশ্য। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান কাদায় মাখামাখি হয়ে তাঁদের দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
উদ্ধার হওয়া এক যাত্রীর অভিযোগ বাসচালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। দুর্ঘটনার ঘন্টা খানেক আগে একটি ধাবার সামনে বাসটি দাঁড়ায়। সেখানেই গলা পর্যন্ত মদ্যপান করেছিল ওই জনৈক বাসচালক। এমনকী তারপর থেকেই অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বাস চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই বাস চালকের বিরুদ্ধে। বাসচালকের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাসচালক জীবিত নাকি মৃত তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এমন মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ভয়ে শিউরে উঠেছেন সাধারণ মানুষ।
সূত্র মারফত আরও খবর, বাসটি ঝাড়খণ্ড থেকে লখনউ-এর দিকে যাচ্ছিল। বাসের মধ্যে ১০০-র বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। বেশ কয়েকটি শিশু থাকারও সম্ভাবনা। এর পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের দীর্ঘদিন ধরেই কাজ চলছে। এরফলে দুই লেনে গাড়ি চলাচল অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তাই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়ানো যাচ্ছে না। তবে এই যাত্রীবোঝাই বাসটি ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল কী না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।