পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝারগ্রাম শহরের জন্য উন্নয়নের ঝুলি নিয়ে হাজির সরকার। ঝারগ্রাম শহরে জেলা পরিষদের নতুন ভবন তৈরি হওয়ার কথা, যা তৈরি হবে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়াম এর পিছনে কনকপল্লী এলাকায়। কিন্তু এই খানেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা। সেই সমস্যা কিছু বেআইনি জবরদখলকে ঘিরে। পশ্চিম মেদিনীপুর ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই জমিতে একটি জবরদখল রয়েছে। ইতিমধ্যেই ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দপ্তর থেকে ওই পরিবারকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে সে জমি থেকে সরে যাওয়ার জন্য, কিন্তু সেই নোটিশে তোয়াক্কা করেনি ওই পরিবার।
অবশেষে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরিস্থিতি হাজির। তাই এবারে ওই পরিবারকে ওই এলাকা থেকে অবিলম্বে উঠে যাবার জন্য সরাসরি নোটিশ জারি করলেন ঝারগ্রাম এলাকার মহকুমা শাসক। প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝারগ্রামের মহকুমা শাসক এক সপ্তাহের মধ্যে জবরদখল সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জানিয়েছেন ওই পরিবারকে। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রশাসন। তৃণমূল নেতাদের কথায়, হঠাৎ করেই পুরভোটের আগে এরকম ধরনের উচ্ছেদ এর নোটিশ অত্যন্ত অস্বস্তিকর, এবং তাতে রাজনৈতিক কিছু অসুবিধাও রয়েছে।
অন্যদিকে, ঝারগ্রাম এর পাশেই একলব্য সরণির ধারে বিস্তীর্ণ সরকারি জমি ইতিমধ্যেই জবরদখল হয়ে সেখানে বাড়ি ঘর পর্যন্ত তৈরি হয়ে গেছে। সেই নিয়ে সরকারের সঙ্গে একাধিক নোটিশ চালাচালিও হয়েছে, কিন্তু তাতে কোন সুবিধা হয়নি। প্রসঙ্গত, ঝারগ্রাম অঞ্চলের জেলা পরিষদের দপ্তরের পরিসর ছোট হয়ে যাবার কারন এই কনক পল্লী এলাকার ওই দুই একর সরকারি জায়গায় জেলা পরিষদের অফিস তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। সেখানেই শুরু হয়েছে সমস্যা। একটি পরিবার সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে থাকে। ওই পরিবারের সদস্যরা বলছেন, "আমরা প্রায় ২৮ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি এবং আমাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১৪। দিনমজুরি করে সংসার চলে আমাদের। টিনের চালা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা বেড়া খুলে দিচ্ছি। খোলা চালা সরিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের ঘরে থাকতে দিতে হবে। না হলে এত জন মিলে আমরা কোথায় থাকবো?"
কিন্তু এই পরিবারটি সদস্যদের কোন কথা শুনতে নারাজ জেলা প্রশাসন। মহকুমাশাসক বাবুলাল মাহাতো বলেছেন, "জেলা পরিষদের ভবন তৈরি করার জন্য যে জমি দেখা হয়েছে, তা চারদিক ঘেরা রয়েছে। টিনের ছাউনি খুলে দিতে হবে। সেখানে বসবাসকারী পরিবারটিকে নোটিশ দিয়ে সাত দিনের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। যদি তারা না সরেন তাহলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।" কিছুটা এরকমই অভিমত জেলা পরিষদের সচিব কালিপদ সিং এর। তিনিও মনে করছেন, জবরদখল সরিয়ে দেওয়ার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। যদিও, এখনো পর্যন্ত এই পরিবারে নিজের জায়গায় অনড় রয়েছে।