বাংলাদেশে হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে যাতে পশ্চিমবঙ্গে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে যায়, তার জন্য এবারে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের শীর্ষ পুলিশকর্তাদের একটি বার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উপরে নজর রাখুন, সমস্ত অফিসার এবং বাহিনীকে সক্রিয় থাকতে বলুন যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না তৈরি হয়। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক হিংসার বেশ কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সরকার দাবি করেছে, তারা যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, কিন্তু পড়শী দেশের ঘটনার পরেই রীতিমতো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীরা। বাংলাদেশের ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়ে এই রাজ্যেও অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাজ্য প্রশাসন। এই কারণেই পুলিশকর্তাদের পাশাপাশি ডিজিকেও সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আবার বাংলাদেশের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেও বিতর্কের মুখে পড়লেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। তার মন্তব্যের বিরোধিতা করে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। সাম্প্রদায়িক উস্কানী এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা এই দুই ধারায় তিনি মামলা দায়ের করেছেন আব্বাস সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ঘটা সাম্প্রদায়িক অশান্তি নিয়ে লিখিত বিবৃতি জারি করে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা তথা বামফ্রন্টের সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র জয়ী ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এর প্রতিষ্ঠাতা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী বললেন, "অপরাধীদের কোন ধর্ম হয় না। " সেখানে তিনি যেমন পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের নিন্দা করেছেন, একইভাবে হিন্দু মন্দির ভাঙচুর এবং পূজামণ্ডপে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আব্বাস সিদ্দিকীর এই মন্তব্য নিয়ে অত্যন্ত বিতর্কের মধ্যে পড়ে যায় সিপিএম এবং কংগ্রেস। সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সুজন চক্রবর্তী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী আলাদা ভাবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানালেন। ড্যামেজ কন্ট্রোল করার জন্য দাদার বিবৃতির উল্টো পথে হেঁটে নিজের মন্তব্য রাখলেন আইএসএফ এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি আবার দোষীদের শাস্তির দাবি নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখলেন।
কিন্তু আব্বাস সিদ্দিকীর এই মন্তব্য নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। রবিবার রাতে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে ১৫৩ এ এবং ২৯৫ এ ধারাই মামলা দায়ের করেছেন বিজেপি তরুণ জ্যোতি তেওয়ারি। আব্বাসের মন্তব্য একজন হিন্দু হিসেবে তার ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলে ফেসবুকে লিখেছেন তরুণজ্যোতি। ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি স্পষ্টভাবে লিখেছেন, আবাসে মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তির পরিবেশ বিনষ্ট করতে পারে। এই কারণেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে আমি। পুলিশ কমিশনারের কাছে তার আবেদন সাম্প্রদায়িক উস্কানী এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা এই দুই মামলায় যেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।