একুশে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে কিছুটা 'ধীরে চলো' নীতি অবলম্বন করেই ঘোষিত হচ্ছে বিজেপির প্রার্থীতালিকা। কিন্তু এরই মধ্যে গোটা রাজ্যজুড়ে জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীদের মধ্যেই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে পছন্দমতো প্রার্থী না পাওয়ায়। অনেকক্ষেত্রেই সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের আচমকাই বিজেপির প্রার্থীপদ পেয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি দীর্ঘদিন দলের হয়ে কাজ করে আসা নেতাকর্মীরা। ফলত, কোথাও কার্যালয় ভাঙচুর, আগ্নিসংযোগ; কোথাও অনশন বিক্ষোভ, পথ অবরোধ চলতে থাকে।
তৃণমূলের প্রার্থীপদ না পেয়ে বিজেপিতে এসে সিঙ্গুরের টিকিট পাওয়া 'মাস্টারমশাই' রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে মেনে নিতে পারেননি দলেরই একাংশ। তাকে বদলের দাবিতে চুঁচুড়ায় জেলা অফিসে বিক্ষোভ, তার ছেলে তুষারকে ফোন করে রবীন্দ্রনাথবাবুকে সরানোর হুঁশিয়ারি কোনোকিছুতেই কাজ না হওয়ায় অনশনে বসেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু প্রথম থেকেই রবীন্দ্রনাথবাবুর টিকিট পাওয়ার বিরোধীতা করা সঞ্জয় পান্ডেকে অনশন মঞ্চে না পাওয়ায় সরাসরি সঞ্জয়ের বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যপক ভাঙচুর করে ওই কর্মীরা। একটি স্কুটি, ঘরের জানলা দরজার কাচ, আসবাব বিনষ্ট করে। সঞ্জয়ের স্ত্রী হতবাক হয়ে বলেন সঞ্জয়বাবু রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের প্রার্থী হবার বিরোধীতাই করেন কারণ উনি নিজেই প্রার্থী হবার দাবিদার। অথচ তার ওপর তারই দলীয় কর্মীদের এহেন আক্রমণ কেন, প্রশ্ন স্ত্রীর।
অন্যদিকে, সাঁইথিয়ায় বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন প্রিয়া সাহা। অপছন্দের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একযোগে ১২০ জন বিজেপি কর্মকর্তা পদত্যাগ করলেন এবং বিজেপির হয়ে ভোটপ্রচারের লড়াই থেকেও নিজেদের সরিয়ে নিলেন তারা। তাদের ইস্তফার সাথে তাদেরই অধীনস্থ প্রায় ৭০০-৮০০ জন কর্মী ভোটের কাজ থেকে নিজেদের তুলে নিলেন। কিন্তু ঠিক কি অভিযোগ প্রার্থী প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে? বীরভূমের এসসি মোর্চার সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, তারা কিছুতেই প্রিয়া সাহাকে মেনে নিতে পারবেননা কারণ তৃণমূল কাউন্সিলরের সাথে কাটমানি দুর্নীতিতে নাম রয়েছে প্রিয়া সাহারও এবং তার কাছে উপযুক্ত প্রমাণ আছে। তিনি আরও বলেন, সাঁইথিয়ায় তাদের জয় নিশ্চিত ছিল তবে দল এরকম দুর্নীতিবাজ প্রার্থী দিয়ে তাদের হারিয়ে দিল।এখন এরূপ ঘটনায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে বীরভূম বিজেপি নেতৃত্ব।