SSC দূর্নীতি মামলার রায়ে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার চাকরি বাতিল করা হয়েছে আগেই। এবার সেই শিক্ষকতার চাকরিতেই বহাল করা হতে চলেছে ববিতা সরকারকে। সঙ্গে অঙ্কিতার ফেরত দেওয়া বেতনের কিস্তির ৭ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১০ দিনের সুদও আগামী ১৯ দিনের মধ্যে তুলে দিতে হবে ববিতার হাতে। এমনই রায়দান করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কে এই ববিতা? কেন সে অঙ্কিতার চাকরি পাচ্ছে? ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর SSC পরীক্ষা দিয়েছিলেন ববিতা সরকার। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয় মেধাতালিকা। সেখানেই ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল ববিতার। প্যানেল লিস্টে থাকা প্রার্থীদের চাকরির পর ওয়েটিং লিস্টের প্রার্থীদের ডাকা হয়। ববিতার নাম ছিল ২০ নম্বরে। কিন্তু, দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর ববিতা জানতে পারেন তাঁর নাম চলে গিয়েছে ২১-এ এবং অঙ্কিতার নাম চলে গিয়েছে ১ এ। ববিতা অভিযোগ করেছিলেন, মন্ত্রীকন্যা পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৬১ নম্বর । তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭৭ । সেক্ষেত্রে কেন তাঁকে নিয়োগ করা হল না! এই বিষয় নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে লড়াই করার পর অবশেষে হাইকোর্ট অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি বেতনও ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ফাঁকা পদে নিয়োগের জন্য ববিতাকে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন পরেশ অধিকারী। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, দল বদলে ২০১৯ সালে যখন তৃণমূলে এলেন, তখন তিনি মেয়ের চাকরি সহ তিনটি শর্ত রেখেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়ে যান পরেশ। আর তারপরেই আরও কঠিন হয়ে পড়ে ববিতার লড়াই। দুই সন্তানের মা ববিতা হাল ছাড়েনি। আর সেই অদম্য জেদী মানসিকতাই তাকে আজ প্রাপ্য চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে ববিতার মনে শঙ্কা ফিরে ফিরে আসছে, অঙ্কিতার ঐ স্কুলের চাকরিতেই কি বহাল হবে সে? পরেশ অধিকারীর পাড়ার স্কুলে যোগ দিলে কোনোরকম হুমকির মুখে পড়তে হবে না তো তাকে? যদিও এখনও স্কুলের নাম ঘোষনা করা হয়নি।