করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই এবার এক বিরাট বড় প্রতারণার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতা লাগোয়া আগরপাড়া এলাকায়। প্রতিদিন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সকলেই এখন রীতিমতো ত্রস্ত। আর এই সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা লুট করা শুরু করেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। আগরপাড়ার এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে এবার সেরকমই এক অভিযোগ। করোনা নেগেটিভ রোগীকে করোনা পজিটিভ বলে ভর্তি রেখে রোগীর পরিবারের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা আত্মসাৎ করলো সেই হাসপাতাল।
আগরপাড়া স্টেশন রোডের বাসিন্দা রাজিব ভট্টাচার্য পুলিশের কাছে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি পেশায় এক বেসরকারি কোম্পানির সাধারণ মানের একজন চাকুরে। গত ৪ জানুয়ারি রাজিব বাবু তার শাশুড়ীকে পা ভেঙে যাওয়ার কারণে আগরপাড়ার অত্যন্ত জনপ্রিয় নার্সিংহোম নেতাজি সেবায়নে ভর্তি করেন। সেই সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওই প্রৌঢ়ার করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই প্রৌঢ়া করোনাভাইরাস পজিটিভ এবং তার জন্য স্পেশাল কেয়ার লাগবে। বাধ্য হয়ে সেই স্পেশাল চিকিৎসা করাতে রাজি হয়ে যান রাজিব বাবু এবং তার পরিবার।
এরপর ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতলে তার শাশুড়িকে ভর্তি রাখেন রাজিব বাবু। দুদিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার হাতে ৭০ হাজার টাকা বিল ধরায়। একটা সাধারণ কর্মচারীর পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এই কারণে তিনি তার শাশুড়িকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হলেও তারা রিপোর্ট দিতে অস্বীকার করেন। পরবর্তী সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে অঞ্জলি মজুমদারের করোনাভাইরাস রিপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট দেখে রীতিমতো চক্ষুচড়কগাছ রাজিব বাবুর। তিনি দেখতে পান, তার শাশুড়ি অঞ্জলি মজুমদার করোনাভাইরাস পজিটিভ হননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সাথে জালিয়াতি করে তার কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলেও হাসপাতাল এই মর্মে সম্পূর্ণরূপে নীরব। তাই অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ রাজিব ভট্টাচার্য এবং তার স্ত্রী।