এ এক ধৈর্য, জেদ, একক সংগ্রামের বাস্তব গল্প। এক-দু বছর নয়, টানা ২৪ বছরের লড়াই। অবশেষে আইনি লড়াই জিতে নিজের ন্যায্য অধিকার জিতলেন তিনি। অনেক উপেক্ষা, অনেক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে অবশেষে জিতলেন তিনি। আনন্দে চোখে জল, তবুও আদালতের রায়ে এ তো খুশির অশ্রু।
পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডাল। খনি এলাকা বলেই পরিচিত। এই এলাকার জামবাদের বাসিন্দা গীতা ভুঁইয়া। ২৪ বছর আগে স্বামী মারা গেছেন। তিনি কোলিয়ারির খনিকর্মী ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী গীতা দেবী ইসিএলের কাছে স্বামীর চাকরির আবেদন জানান। কিন্তু অভিযোগ, গীতা দেবীকে ইসিএলের তরফে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি কিংবা কোন আর্থিক ক্ষতিপূরণ। ইসিএলের কাছে গীতা দেবী বারবার গিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। বেশ কয়েকবার মৌখিক ভাবে তাঁকে কাগজপত্র জমা করতে বলা হলেও আখেরে কোন লাভ হয়নি।
গোটা বিষয়টি গড়ায় আদালতের চক্করে। এক স্বামীহারা সাধারণ নারীর একা লড়াই এতবড় সংস্থার বিরুদ্ধে, এত সহজ ছিল না। বারবার ইসিএল ঘোরাতে থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি চলতি বছরের গোড়ার দিকে আদালতের দ্বারস্থ হন। আর আদালতের নির্দেশে তিনি সুবিচার পেলেন। গীতা দেবীর দীর্ঘ ২৪ বছরের একক লড়াই অবশেষে সাফল্যের মুখ দেখল। আদালতের রায়ে অশ্রুসজল তাঁর চোখ। আর সংস্থা তাঁকে চাকরি দিতে বাধ্য। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সংস্থার তরফে গীতা দেবীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।
এই হার না মানা লড়াই মানুষের কাছে এক নতুন বার্তা আনবেই, বলছেন গীতা দেবীর আইনজীবী। সূত্রের খবর, গীতা দেবীকে আদালতের চক্করে বেশিদিন ঘুরতে হয়নি, কিন্তু সেই সংস্থার দোরগোড়ায় বছরের পর বছর ধর্ণা দিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। অবশেষে তিনি পেলেন সুবিচার।