বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Pujo) মানেই ঘুড়ি ওড়ানোর ধূম। শহরের প্রায় অধিকাংশ ছাদেই চলে এই প্রতিযোগিতা। কিন্তু এই ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে যে এমন চরম বিপত্তি নেমে আসবে কে জানত!
প্রতি বছরের মতোই তিন ভাই চারতলার ছাদে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। পরিকল্পনা ছিল দূরের একটি ঘুড়িকে কাটা। অনেকক্ষণ ধরেই এই কাটাকুটির প্রতিযোগিতা চলছে। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে দু-এক পশলা হালকা বৃষ্টি। ছাদ থেকে নেমে যাওয়ার ইচ্ছে হলেও শেষ ঘুড়িটি কাটার নেশায় মশগুল তিন ভাই। হঠাৎ-ই জোরে আলোর ঝলকানি এবং তৎক্ষনাৎ প্রচন্ড শব্দ। দুই ভাই ভয় পেয়ে দৌড়ে পালালেও আর একজনের অনেকক্ষণ আসছে না দেখে বাড়ির লোকের সন্দেহ হয়। ছাদে গিয়ে দেখা যায় এক ভাইয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে।
ঘটনাটি শুক্রবার বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বেলুড়ের। বেলুড়ের লালবাবু সায়র রোডের বাসিন্দা সুজিত হাজরা এবং চন্দনা হাজরা। তাঁদের একমাত্র বছর পনেরোর ছেলে জিৎ হাজরা। জিৎ তার জেঠতুতো দাদা এবং এক ভাইয়ের সঙ্গে চারতলার ছাদে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। অনেকক্ষণ কাটাকুটি খেলার পর হঠাৎ-ই হালকা বৃষ্টি আসে। আর আচমকাই বাজ পড়ে। দুই ভাই কোনভাবে ছাদ থেকে চলে আসতে পারলেও জিৎ আসতে পারেনি। অচৈতন্য অবস্থায় জিতকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
এই ঘটনার পর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পেশায় আঁকার শিক্ষক সুজিত বাবুও অসুস্থ। একমাত্র ছেলের মৃত্যু মা-বাবা বাক্যহারা। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন গোটা শহর জুড়ে বিভিন্ন রঙের ঘুড়ির মেলা বসে। ছেলে থেকে বুড়ো সবাই খেলায় মাতেন। কিন্তু এরসঙ্গে বিপদের সম্ভাবনাও যে থাকতে পারে এ নিয়ে সচেতন থাকা উচিত বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বিশেষ করে উঁচু ছাদে ঘুড়ি ওড়ানো তো অতি বিপজ্জনক। তা নাহলে এমন কত চন্দনা হাজরার কোল খালি হতে পারে তার ইয়ত্তা নেই।