২০১৭ সালের মার্চে সমাজবাদী পার্টি-কে সরিয়ে দেশের বৃহত্তম রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছিল ভাজপা। দেশ দেখেছিল এক অভিনব ‘যোগী’ মুখ্যমন্ত্রীকে। এবার তথ্যে উঠে এলো, বিগত সাড়ে চার বছরে, যোগীর রাজত্বকালে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ‘এনকাউন্টার’ করে মোট ৩,৩০২ জন অভিযুক্ত অপরাধীকে আহত করেছে। মোট এনকাউন্টারের সংখ্যা ৮,৭৪২। আহতদের অধিকাংশেরই শরীরে বুলেটের ক্ষতচিহ্ন এখনও জ্বলজ্বল করছে। কেউ বা আবার পায়ে গুলি লেগে বর্তমানে হাঁটতে চলতে অক্ষম। শুধু আহতই নয়, পুলিশি এনকাউন্টারে প্রানও হারিয়েছেন ১৪৬ জন।
যদিও উত্তর প্রদেশ পুলিশের বরিষ্ঠ অধিকর্তারা এই এনকাউন্টার-গুলিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানতে নারাজ। একই সাথে তাঁরা এই বিষয়ে অত্যন্ত উদাসীনও বটে। তাঁদের উদাসীনতার সবথেকে বড় প্রমান, ঠিক কতজন অভিযুক্ত অপরাধী পুলিশি এনকাউন্টারে তাঁদের হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়েছেন, সে বিষয়েও রাজ্য পুলিশের কাছে কোনও সঠিক নথিপত্র নেই। অপরদিকে তাঁরা দাবী করেছেন, এনকাউন্টার চলাকালীন ১৩ জন উর্দিধারী নিহত হয়েছেন এবং ১,১৫৭ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮,২২৫ জন গ্রেফতার হয়েছে বলেও জানান উত্তরপ্রদেশ পুলিশের শীর্ষমহল।
তবে এই পুলিশি এনকাউন্টারে আহত এবং নিহতের সংখ্যার অনুপাতকে ঢাল করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, আহতের অত্যধিক মাত্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমান করে, তাঁরা অপরাধীদের শুধুই গ্রেফতার করতে চান, মারতে চান না। তিনি আরও বলেন, আজ পর্যন্ত সে রাজ্যে অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে কোনও এনকাউন্টার করা হয়নি। প্রত্যেক এনকাউন্টারই ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি এবং সর্বোচ্চ আদালতের নিয়ম মেনেই হয় বলে তিনি দাবী করেন।
উত্তরপ্রদেশে এনকাউন্টারে এই মুহূর্তে শীর্ষে আছে মিরাট। সেখানে মোট এনকাউন্টারের সংখ্যা ২,৮৩৯। মোট গ্রেফতারী ৫,২৮৮। আহতের সংখ্যা ১,৫৪৭ এবং নিহত হয়েছেন ৬১ জন। দ্বিতীয় স্থানে আছে আগ্রা। সেখানে পুলিশি এনকাউন্টারের মোট সংখ্যা ১,৮৮৪। পাশাপাশি সেখানে ২১৮ জন আহত হয়েছেন এবং নিহতের সংখ্যা ১৮। ১,১৭৩ টি এনকাউন্টার ও ২৯৯ জন আহত অপরাধীদের নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে বারেলি। শুধু অপরাধীর দিক থেকেই নয়, মিরাটে এনকাউন্টার চলাকালীন পুলিশের আহত হওয়ার সংখ্যাও সব থেকে বেশি। শুধু মিরাটেই ৪৩৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। সেই সাথে বারেলি তে ২২৪ জন এবং গোরখপুরেও ১০৪ জন পুলিশকর্মী এনকাউন্টার চলাকালীন আহত হয়েছেন।