উত্তর প্রদেশের মিরাটের কাছে এক জঙ্গল থেকে উদ্ধার দুই কিশোরের রক্তমাখা মৃতদেহ। মৃত দুই কিশোরের একজন মোঃ সাদিক(১৪), অপরজন মোঃ আমান(১৩)। দুজনের শরীরেই পাওয়া গেছে একাধিক গভীর ক্ষতচিহ্ন। যা দেখে সন্দেহ করা হচ্ছে, নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে দুই কিশোরকে।
এমনিতে স্কুলছাত্র হলেও করোনাকালে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির তাগিদে দুজনে নেমে পড়েছিল কাজে। অতিমারিতে স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে দুজনে শুরু করেছিল ই-রিক্সা চালানো। ঘটনার দিনও তারা তাদের রিক্সাতেই ছিল। পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তাদের কাছে মোবাইল ফোন পর্যন্ত ছিল। যদিও তাদের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া গেলেও ই-রিক্সা বা তাদের মোবাইল ফোনের খোঁজ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আর এই নিখোঁজ ফোন বা রিক্সাকে কেন্দ্র করেই উঠে আসছে ঘটনায় ডাকাত যোগের সম্ভবনা।
তবে এই সম্ভবনা খারিজ করেছে খোদ পুলিশ। তাঁদের মতে, ডাকাতির উদ্দেশ্যে খুনের ঘটনা কোনোদিনও এত নৃশংস হতে পারে না। এক পুলিশকর্তার কথায়, মৃতদেহদুটিকে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে টেনে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যা স্বাভাবিক ডাকাতির ক্ষেত্রে দেখা যায় না। যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ দুই কিশোরকে যৌন নির্যাতনের কোনও ইঙ্গিত পায়নি, তবে খুনের পিছনে তাঁরা প্রেমজনিত সহ অন্যান্য সম্ভাব্য বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখছেন বলেই খবর।
ইতিমধ্যেই, অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুন সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনায় বিধ্বস্ত সাদিকের বাবা, পেশায় পাম্পের মিস্ত্রী জানে আলম। তিনি বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যাবেলায় ছেলে সাদিকের সাথে তাঁর শেষ বারের মতো কথা হয়েছিল। সেই সময়েও স্বাভাবিক ভাবে কথা বলেছিল ছেলে। কিন্তু তার পরেই সাদিকের ফোন সুইচ অফ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও খোঁজ না পেয়ে তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে যান। আর তার একদিনের মধ্যেই অর্থাৎ রবিবার, তাঁরা এই নৃশংস ঘটনার কথা জানতে পারেন। কারোর সাথে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না বলেই জানিয়েছেন সাদিকের বাবা। ঘটনায় শোকগ্রস্ত দুই কিশোরের প্রতিবেশীরাও।