বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই সারা ভারতে করোনাভাইরাস এর ঘটনা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বর্তমানে লক্ষাধিক মানুষ ভারতে করনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তার সাথেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাস এর নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রণ আক্রান্ত হয়ে। এই পরিস্থিতিতে যখন সারা দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে, সেই পরিস্থিতিতেই লকডাউন এবং নাইট কারফিউর পথ নিতে শুরু করেছে বেশকিছু রাজ্য।
এর আগেই আমরা দেখেছি সারা পশ্চিমবঙ্গে নাইট কারফিউর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত ১০ টা নাগাদ থেকে কলকাতা শহরে এবং পশ্চিমবঙ্গে নাইট কারফিউ জারি করা হয়েছে। ৩ জানুয়ারি থেকে নতুন করে বিধি-নিষেধ জারি করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তার সাথেই একাধিক জায়গায় কনটেইনমেন্ট জোন এবং মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোনও তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। বিধি-নিষেধের কিছু বদল এনে গতকাল নতুন বিধিনিষেধের তালিকাও প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে শুধু একা পশ্চিমবঙ্গ নয়, দিল্লি, কর্ণাটক, গুজরাট, মহারাষ্ট্র সহ ভারতের একাধিক রাজ্যে জারি করা হয়েছিল নাইট কারফিউ এবং লকডাউন।
আর এবারে পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের অন্যান্য কিছু রাজ্যের পথে হেঁটে নাইট কারফিউ চালু করার ঘোষণা করল ত্রিপুরা সরকার। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত নাইট কারফিউ জারি করার ঘোষণা করেছে ত্রিপুরা সরকার। ত্রিপুরা সরকার জানিয়েছে, এই দিনগুলিতে রাত ৯ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। এছাড়া অন্য বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে ওমিক্রণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। ত্রিপুরা সরকার জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সিনেমা হল, বিনোদন পার্ক, বার এবং রেস্টুরেন্ট, সমস্ত কিছু ৫০ শতাংশ ক্যাপাসিটি নিয়ে চালাতে হবে। তার সাথেই জিম এবং সুইমিং পুলের জন্য আলাদা নিয়ম জারি করেছে ত্রিপুরা সরকার। নতুন ঘোষণা করে জানানো হয়েছে, ১/৩ ভাগ ক্যাপাসিটি নিয়ে ত্রিপুরায় জিম এবং সুইমিংপুল চালু করা যাবে।
এছাড়াও রয়েছে একাধিক বিধি-নিষেধ। যে কোন বদ্ধ জায়গায় মিটিং এবং জনসমাগম করতে হবে ১/৩ ভাগ ক্যাপাসিটি নিয়ে। সমস্ত জায়গায় করোনাভাইরাস বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। খোলা জায়গায় কোনরকম জনসমাগম করা যাবে না। রাত ৮.৩০ পর্যন্ত সমস্ত রেস্টুরেন্ট এবং ধাবা খোলা থাকতে পারে ৫০ শতাংশ ক্যাপাসিটি নিয়ে। যেকোনো শপিং কমপ্লেক্স, বিউটি পার্লার এবং সেলুন খোলা থাকবে সকাল ৬ টা থেকে রাত ৮.৩০ পর্যন্ত। সমস্ত জায়গায় করোনাভাইরাস বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। সোশ্যাল ডিসটেন্স যাতে পালন করা হয় তার জন্য ভলেন্টিয়ার নিযুক্ত করতে হবে বাজার কমিটি কে। কোন রকম মেলা করা যাবে না। সরস মেলার মতো একাধিক অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে ত্রিপুরা সরকারের দ্বারা। অফিস কর্মীদের মিলিয়ে চলতে হবে সমস্ত ধরনের করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ। সমস্ত জায়গায় সঠিক স্যানিটাইজেশন করতে হবে। বিবাহের অনুষ্ঠানে সর্বাধিক উপস্থিত থাকতে পারবেন ১০০ জন। শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকতে পারবেন সর্বাধিক ২০ জন। সমস্ত ধর্মীয় স্থান খোলা থাকতে পারে কিন্তু সব জায়গায় সঠিক বিধি নিষেধ পালন করতে হবে। সর্বোপরি, বাড়ি থেকে বের হলেই অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।