প্রধানমন্ত্রীর কয়েক ঘন্টার অনুষ্ঠান, তাতেই খরচ হবে ২৩ কোটি টাকা। খরচের বহর দেখেই চক্ষু কপালে তুলেছেন ওয়াকিবহাল মহল। আগামী ১৫ নভেম্বর বীরসা মুন্ডার (Birsa Munda) জন্মদিন। এদিনই কেন্দ্র সরকার পালন করবে 'জনজাতীয় গৌরব দিবস'। দেশজুড়ে এক সপ্তাহ ধরে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বীরপুরুষ বীরসা মুন্ডার জনমোহিনী মাহাত্ম্যকে। সেই উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) সরকারও এক বিশেষ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে আসবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই অনুষ্ঠান বাবদ মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য খরচ হবে অন্তত ২৩ কোটি টাকা।
কীভাবে খরচ হবে এই টাকা? মধ্যপ্রদেশ সরকার সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ২ লক্ষ জনজাতিভুক্ত মানুষদের আনা হবে মধ্যপ্রদেশের জমবুরি ময়দানে। গোটা ময়দানটি সুদৃশ্য ভাবে সাজানো হচ্ছে। থাকবে জনজাতিভুক্ত ব্যক্তিত্বদের ছবি। সেই মানুষদের নিয়ে আসা, তাঁদের থাকা ও খাওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করা হবে। থাকা-খাওয়া খরচ বাবদ অন্তত ১২ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে সূত্রে খবর। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠান মঞ্চ, প্রচার-সহ অন্যান্য খাতে অন্তত ৯ কোটি টাকা খরচ বরাদ্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের তরফে হঠাৎ-ই এমন বিপুল খরচের কারণ কী? ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা আগামী বছরের শুরুতেই উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের নেট প্র্যাকটিস এখান থেকেই শুরু। তাই বিজেপির পাখির চোখ উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন। আর উত্তরপ্রদেশের একটা বড় সংখ্যক এলাকা আদিবাসী উপজাতি অধ্যুষিত। তাই সেই ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে সরকার দরাজ হৃদয়ে এমন সিদ্ধান্তের ঘোষণা করল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। আদিবাসীদের কাছে বীরসা মুন্ডা ভগবানতুল্য চরিত্র। তাই তাঁদের মনজয়ে সরকারের সদিচ্ছা থাকবেই বলাই বাহুল্য বলছেন ওয়াকিবহাল মহল। তার পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশের একটা বড় সংখ্যক ভোটব্যাঙ্ক জনজাতিভুক্ত। সেদিকেও সরকারের নজর থাকবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।
এই খরচের বহর শুনে ইতিমধ্যেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কোভিড পরিস্থিতির জেরে গোটা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই নাস্তানাবুদ। তার মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির ফলে 'নুন আনতে পান্তা' ফুরনোর অবস্থা মধ্যবিত্তের। এমন অবস্থায় মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এত খরচের বহর দেখে বিরোধীদের একাংশ তীব্র কটাক্ষ করেছেন।