দেশজুড়ে বাড়ছে কয়লার সংকট (Coal Crisis)। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিন কয়েকের মধ্যেই গোটা দেশে যে একটা বড়সড় সংকট নেমে আসতে চলেছে, তা গত কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যেই দিল্লি-সহ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলি রাজ্যবাসীর কাছে জানিয়েই রেখেছে, কেন্দ্র ঠিকমতো কয়লার জোগান দিতে না পারলে খুব শীঘ্রই বন্ধ হতে পারে বিদ্যুৎ পরিষেবা। নেমে আসতে পারে অন্ধকার দিন।
এমন পরিস্থিতির কারণ কী? হঠাৎ-ই কি এই সংকট নেমে এসেছে? নাকি গত কয়েক বছরে সরকারের ভ্রান্তনীতির ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে? ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা মূলত দু'টি কারণে গোটা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে কয়লা সংকট। এক. আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার মূল্যবৃদ্ধি এবং দুই. সরকারের ভ্রান্তনীতি। করোনা পরিস্থিতির পর থেকেই গোটা বিশ্বে বেড়েছে কয়লার চাহিদা। এর জেরে বেড়েছে কয়লার মূল্যবৃদ্ধি। তারফলে বাইরের দেশ থেকে যে কয়লা আমদানির ঘটনা ঘটত, তাতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বেড়েছে কয়লা আমদানির খরচ। এরফলে দেশে কয়লা সংকট চরমে উঠেছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
অন্যদিকে সরকারি তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই কোল ইন্ডিয়ার নজর কয়লা থেকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বচ্ছ ভারত অভিযানে। স্বচ্ছ ভারতের অভিযানের আওতায় কোল ইন্ডিয়াকে শৌচাগার বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরফলে এতদিন কোল ইন্ডিয়া যে উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে আসছে, তাতে বাধা সৃষ্টি হয়। গত কয়েক বছরে নতুন খনির সন্ধান তো করাই হয়নি, পাশাপাশি সরকারের ভ্রান্তনীতির ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে খবর।
তাছাড়া ইউপিএ জমানায় কোল ইন্ডিয়ার উপর বারবার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। কয়লা বন্টনকে ঘিরে তৈরি হয় চরম বিশৃঙ্খলা। সে জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় কয়লা বন্টন নীতি। কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরেও সেই সংকট থেকে মুক্তির কোন উপায় খোঁজা হয়নি। এমনকী নতুন নতুন খনি সন্ধান তো করাই হয়নি। উল্টে কোল ইন্ডিয়াকে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের দায়িত্ব দিয়ে গোটা দেশে শৌচাগার নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে কয়লা সংকট যে আরও চরম পর্যায়ে পৌঁছাবে, তা বলাই বাহুল্য।