গত বছরে ঠিক এই সময়েই করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য তবলিগি জামাতকে কাঠগোড়ায় তুলেছিল দিল্লীর মানুষ, অভিযোগ উঠেছিল সেই জামাতের জন্যই দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। এমনকি ওই জামাতে অংশগ্রহণকারীদের সরাসরি দেশদ্রোহীর তকমাও দেওয়া হয়েছিল। আর এই বছর একই সময়ে শুরু হরিদ্বারের কুম্ভমেলা।
স্বাস্থ্যবিধিকে তোয়াক্কা না করেই, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব এমনকি উত্তরপ্রদেশও যেখানে ধর্মীয় স্থানে জমায়েত আপাতত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, তখন রবিবার সন্ধ্যায় হরিদ্বারের হর কী পৌড়ীতে লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত। বেশির ভাগই মাস্কহীন।
কুম্ভ মেলায় দ্বিতীয় শাহি স্নানের জন্য গত কাল বিকেল পর্যন্ত হরিদ্বারে এসে পৌঁছেছেন প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ। কোভিডের প্রকোপ বাড়লেও কুম্ভে ন্যূনতম কোভিড সতর্কতা বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তরাখণ্ড সরকার, ফলে কুম্ভ কোভিড সংক্রমণের ‘সুপারস্প্রেডার’ হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ছে। এদিকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিংহ রাওয়তের মতে, "সব কোভিড বিধি মেনেই কুম্ভমেলা পরিচালনা করা হচ্ছে। ঈশ্বরভক্তি রোগের ভয়কে জয় করতে সাহায্য করবে।"
তবে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী যতই দাবি করুক, সব কোভিড বিধি মানা হচ্ছে। আদতে চিত্রটি ঠিক তেমন? অভিযোগ, হরিদ্বারের স্টেশন এবং মূল জমায়েত স্থান অর্থাৎ হর কি পৌড়ী ও ঘাটগুলিতে দেখা যাচ্ছে না থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের কোনও ব্যবস্থা। নেই সে চিহ্ন, এমনকি অধিকাংশ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। শিকেয় দূরত্ব বিধি এমনকি যারা মাস্ক পরছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনরূপ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে খোদ উত্তরাখণ্ড সরকারের মেডিক্যাল দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা থেকে সোমবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ১৮,১৬৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০২ জন কোভিড পজ়িটিভ। আজ হরিদ্বারে ৫৯৪ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এ নিয়ে ২ দিনে হরিদ্বারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার জন।