ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন এর বিরুদ্ধে জোরদার কৃষি আন্দোলন ১০ মাস ধরে চলছে। দিল্লি থেকে শুরু করে রাজস্থান হরিয়ানা এবং উত্তর প্রদেশের বেশ কিছু জায়গায় এই কৃষক আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে সবথেকে বেশি। এবারে, কেন্দ্রীয় সরকার সহ এই চারটি রাজ্যের শীর্ষকর্তাকে কৃষক আন্দোলন নিয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন। নোটিশে তারা জানতে চেয়েছে, কিভাবে কৃষক আন্দোলনের প্রভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে? কিভাবে শিল্প এবং গণপরিবহনে প্রভাব পড়েছে? এবং সরকার এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেই নিয়ে। চার রাজ্যের মুখ্য সচিব, তিন রাজ্যের ডিজি, এবং দিল্লির পুলিশ কমিশনার এই নোটিশ পেয়েছেন। এই নোটিশে স্পষ্ট উল্লেখ করা রয়েছে, কৃষক আন্দোলনের বিরূপ প্রভাবের ব্যাপারে তাদেরকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে স্পষ্ট করে লেখা, "কৃষক আন্দোলনের বিরূপ প্রভাব পড়েছে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে। প্রায় নয় হাজার এমএসএমই সেক্টর প্রভাবিত হয়েছে। পাশাপাশি গণপরিবহন অত্যন্ত প্রভাবিত। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রী, এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা সমস্যার শিকার হয়েছেন। কৃষক আন্দোলনের প্রভাবে বেশ কিছু জায়গায় যানজট এমনকি রাস্তা বন্ধের কথা শোনা গিয়েছে। পাশাপাশি, বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় গতিবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সমস্যা হয়েছে।" বিশেষত এই সমস্ত অভিযোগগুলির সত্যতা যাচাই করার জন্য এই চারটি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানদের রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তবে, মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, যদি কৃষকরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ সংগঠিত করেন তাহলে সেটা তারা করতে পারেন।
কমিশন প্রশ্ন করেছে, " এ কৃষক আন্দোলন নিয়ে বিকল্প কোন বন্দোবস্ত প্রশাসনিক স্তরে হয়েছে কি?" অন্যদিকে আবার, উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের স্বনির্ভর করার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী নিজেই সওয়াল করে এসেছেন। আলীগড়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার সময় মোদি দাবি করেছেন, "শরিক হিসেবে কৃষকদের পাশে থাকতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়াও করোনাভাইরাস এর সময় ইতিমধ্যেই এক লক্ষ-কোটি টাকা ক্ষুদ্র কৃষকদের প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার মধ্যে, ২৫ হাজার কোটি শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের কৃষক। এছাড়াও দেশের ১০ জন কৃষকের মধ্যে ৮ জন দুই বিঘা কিংবা তার কম জমিতে চাষাবাদ করেন। তাই তাদের স্বনির্ভর করতে কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।" তবে রাজনৈতিক মহলের মতামত, উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এবং ঠিক সেই কারণেই, উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের প্রতি 'সাহায্যের হাত' বাড়িয়ে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভোট বড়ো বালাই!