বি-টাউনের বাদশা শাহরুখ খান পুত্র আরিয়ান খানের মাদকযোগ নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। আপাতত মুম্বাইয়ের আর্থার রোড জেলে বন্দী রয়েছেন তিনি। বারংবার জামিনের আবেদন হলেও নাকচ হয়েছে তা। এনসিবি গোটা বলিউড মহলে মাদকযোগ সন্ধান করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এর মধ্যেই আজ রবিবার এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন মাদক মামলার সাক্ষী। তিনি সরাসরি জানিয়েছেন যে শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য এনসিবি বা নারকোট্রিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তাকে টাকা দিয়েছে। এই কথা সামনে আসতেই এনসিবি সাফ জানিয়েছে "সবই মিথ্যা রটনা, ঠিক সময়ে এর জবাব দেওয়া হবে"। তবে এতে বিতর্ক থামছে না।
আসলে আরিয়ান খান গ্রেফতারের সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ছবি ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল যেখানে দেখা গিয়েছিল শাহরুখ তনয়ের সাথে নিজস্বী তুলছেন এক ব্যাক্তি। প্রথমে অনেকেই মনে করেছিলেন উনি এনসিবি অফিসার। তবে এই বিষয়ে জলঘোলা হতে এনসিবি বিবৃতি দিয়ে জানায় যে ওই ব্যক্তির নাম কিরণ পি গোসাভি। তিনি কোনো অফিসার নয়। বরং কিরণ এই মামলার অন্যতম সাক্ষী। তবে সকলকে অবাক করে দিয়ে তারপর থেকেই পলাতক কিরণ। এই প্রসঙ্গ তুলেই তাঁর সহযোগী প্রভাকর দাবি করেছেন, "কিরণ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে ফাঁকা চেক দিয়েছিল। শাহরুখ পুত্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ১৮ কোটি টাকার চুক্তি করা হয়েছে। এখন হয়তো কিরনের জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।" তবে অন্যদিকে এনসিবি প্রভাকরের দাবি "সম্পূর্ণ মিথ্যা" বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
তবে ইতিমধ্যেই আরিয়ান খান গ্রেপ্তার কাণ্ডে রাজনীতির রং লেগেছে। পলাতক সাক্ষী কিরণের একটি ভিডিও প্রকাশ করে টুইটারে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত। ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে এনসিবি দপ্তরে আরিয়ান খানের পাশে বসে নিজের ফোনে কিরণ কারোর সঙ্গে কথা বলালেন তাঁকে। ভিডিও টুইট করে রাউত লিখেছেন, "আরিয়ান কাণ্ডে এনসিবি প্রভাকর সেইলকে ফাঁকা পঞ্চনামায় সই করিয়েছি শুনে আমি চমকে উঠেছিলাম। সাক্ষীর বিনিময় বহুল পরিমাণ টাকার লেনদেন হয়েছে। মহারাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এরকম করা হচ্ছে।"
অন্যদিকে লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী দাবি করেছেন, মুম্বাইয়ে বিজেপি ঘনিষ্ঠ আদানির বন্দরে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার হওয়া বা লক্ষিম্পুর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিত্রের পুত্র আশিসের নাম জড়িয়ে যাওয়ার দিকে থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য শাহরুখ খানের ছেলেকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। এছাড়া সুরকার বিশাল দাদলানি এবং প্রবীণ অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা দাবি করেছেন যে শাহরুখ খানের ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। রাজনৈতিক অভিসন্ধিতে আজ জেলবন্দি আরিয়ান খান। এই সবকিছুর মাঝে টাকার বিনিময়ে সাক্ষী জোগাড়ের কথা আরিয়ান বিতর্ককে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেল।