অবশেষে অপেক্ষার অবসান। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পর্দার আড়াল থেকে গোটা বিশ্বের সামনে নিয়ে এল 'স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি'। হায়দ্রাবাদে সন্ত রামানুচার্যের ২১৬ ফুট উচ্চতার মূর্তির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। একাদশ শতাব্দীতে গোটা দেশ পায়ে হেঁটে ঘুরে সাম্যের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন সন্ত রামানুচার্য। তাঁরই ১০০৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল ১৪ দিনব্যাপী বিরাট অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিনে আজ, শনিবার তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদের নিকটস্থ সামশাবাদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি 'স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি' উদ্বোধন করলেন। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মূর্তির তকমা পেল। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছাড়াও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত এবং একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
'স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি' উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "সমাজকে সঠিক দিশা দেখাতে আধ্যাত্মিকতার পথ দেখতেন সন্ত রামানুচার্য। তিনি বলতেন যে আমি একা নরকে যাব এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু সবার যেন কল্যাণ হয়। তাঁর গুরু তাঁকে কল্যাণের জন্য যে মন্ত্র শিখিয়েছিলেন সেই মন্ত্র তিনি পাহাড়ের উপর বসে প্রত্যেককে প্রদান করেছিলেন। তিনি হলেন ভারতের ঐক্যের অন্যতম প্রতীক। দক্ষিণে জন্মগ্রহণ করলেও পূর্ব থেকে পশ্চিম সব জায়গায়, তাঁর মহিমা পৌঁছে গিয়েছিল।" এছাড়াও তিনি আরও বলেন, "আজ গোটা বিশ্বে সামাজিক সংস্কার এবং প্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। অথচ আমরা যখন রামানুচার্যকে দেখি তখন বুঝতে পারি প্রগতিশীলতা আর প্রাচীনত্ব এর মধ্যে কোনও ফারাক নেই।"
'স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি' এর বিশেষত্ব একনজরে:
-
'স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি' র উচ্চতা ২১৬ ফুট।
-
মূর্তিটি পঞ্চধাতু নামক একটি ধাতু দিয়ে তৈরি যার মধ্যে রয়েছে সোনা, রুপো, তামা, পিতল এবং টিন।
-
এই মূর্তিটি ৫৪ ফুট উঁচু ত্রিস্তরীয় ভদ্রবেদীর ওপর বসানো হয়েছে। বেদির ওপর রয়েছে একটি বিশাল আকার পদ্মফুল। পদ্মফুলের ওপর বসানো হয়েছে মূর্তিটিকে।
-
মূর্তি তৈরির ভিত্তিপ্রস্তর পোঁতা হয় ২০১৪ সালে। তারপর থেকে কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালে মূর্তির কাঠামো গড়ে তোলা হলেও, মূর্তি এবং সংলগ্ন এলাকার কাজ সম্পন্ন করতে আরও ৪ বছর সময় লেগে যায়।
-
মূর্তির নিচের তলায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সন্ত রামানুচার্যের জীবনকাল এবং দর্শন। এছাড়া উপরের তলায় ১৪ হাজার ৭০০ স্কয়ার ফুট জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বৈদিক ডিজিটাল গ্রন্থাগার এবং গবেষণাগার।
-
মূর্তি তৈরি করতে ১০০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
-
মূর্তিটি ৪৫ একর জমি জুড়ে তৈরি করা হয়েছে।