বছর ছ’য়েকের ছেলেকে মুখে টেনে নিয়ে যাচ্ছে চিতাবাঘ (leopard)। এমন দৃশ্য দেখে খালিহাতেই বাঘের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন মা । যদিও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষে নিজের সন্তানকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছেন মহিলা। রবিবার সন্ধ্যাবেলায় ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যানে।
সূত্রের খবর, বাইগা জনগোষ্ঠীর সদস্য কিরণ নামে ওই মহিলা বড়ি ঝিরিয়া নামক গ্রামে থাকেন। রবিবার সন্ধ্যাবেলায় তিনি তাঁর কুঁড়েঘরের পাশে আগুন জ্বালিয়ে বসে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাঁর কোলে ছিল মাস পাঁচেকের কনিষ্ঠতম সন্তান। ছ’বছরের রাহুল এবং তার আরও দুই ভাইবোন মায়ের অদূরেই বসে ছিল। তবে তাদের কেউই ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি, পিছন থেকে তাদের দিকে নজর রাখছে একটি চিতাবাঘ।
এমন সময় হঠাৎ করেই অন্ধকার থেকে বিদ্যুৎবেগে ঝাঁপ মারে চিতাবাঘটি। রাহুলকে মুখে করে টেনে নিয়ে সেখান থেকে পালায় সে। তবে সেই ঘটনায় চমকে উঠে একমুহূর্ত সময় নষ্ট না করে কিরণ, কোলের শিশুসন্তানটিকে আর এক সন্তানের হাতে ধরিয়ে তাদের কুঁড়েঘরের ভিতর ঢুকতে নির্দেশ দেন এবং দ্রুতবেগে ধাওয়া করেন চিতাবাঘটিকে।
অন্ধকারের মধ্যেও ঝোপের ভিতর বসে থাকা চিতাবাঘকে লক্ষ্য করতে সক্ষম হন তিনি। কিরণ দেখেন, তাঁর ভিতসন্ত্রস্ত সন্তানের উপর একটি থাবা রেখে বসে রয়েছে বাঘটি। তাঁর কথায়, এরপরেই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন বাঘটির উপর। নিজের ছেলেকে জাপটে ধরে সর্বশক্তি দিয়ে টান মারেন তিনি। আচমকা ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় হতভম্ভ হয়ে পড়ে চিতাবাঘটিও। সে ছেড়ে দেয় রাহুলকে। বাঘে-মানুষে টানাটানিতে অবশেষে জয় পায় মানুষ। কিন্তু ঘটনায় আহত হয়েছেন কিরণ এবং রাহুল, দুজনেই। চিতাবাঘের নখের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে বছর ছ’য়েকের রাহুলের মুখ। যদিও সবশেষে বলাই যায়, সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে কেবলমাত্র নিজের সাহসে ভর করে নিজের সন্তানকে বাঁচিয়ে এনেছেন ‘বাঘিনী’ মা। কুর্নিশ এমন মা’কে।