করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে আমাদের সব থেকে বড় অস্ত্র হতে চলেছে ভ্যাকসিন। কিন্তু সমস্ত ভ্যাকসিন কি সত্যিই ভালো কাজ করতে পারে, করোনাভাইরাস এর বিরুদ্ধে? হয়তো না। সম্প্রতি ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ফাইজারের তৈরি করা টিকা করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক ভেরিয়েন্ট এর ক্ষেত্রে যতটা বেশি কার্যকরী, ততটা কিন্তু ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর জন্য নয়। আর ভারতে বর্তমানে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সবথেকে বেশি ছড়িয়ে রয়েছে। একটি পরিসংখ্যান রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, যেখানে আসল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ফাইজারের ভ্যাকসিনের কার্যকরী ক্ষমতা ৭৯% সেখানে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর জন্য মাত্র ৩২ শতাংশ। এই কারণে ল্যানসেটের জার্নালে বলা হয়েছে যেন খুব তাড়াতাড়ি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। পাশাপাশি তাদেরকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হোক, যাতে তাদের অসুবিধা না হয় এবং অ্যান্টিবডি তৈরি করার প্রবণতা বাড়ে।
সম্প্রতি ভারত সরকার করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের চাপ কমাতে কোভিশিল্ডের ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মধ্যে ব্যবধান ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করে দিয়েছে। বর্তমানে ভারতে এত দ্রুত পরিমাণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে যে ভারত সরকার এই ভ্যাকসিনের চাহিদা মেটাতে একেবারে বেসামাল হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, ব্রিটেনে আবার এই ফাইজারের করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। ব্রিটেনের জনস্বাস্থ্য আধিকারিক আশঙ্কা জানিয়েছেন, ব্রিটেনে বর্তমানে স্থায়ী আলফা স্ট্রেন যদি পরিবর্তিত হয়ে ডেল্টা স্ট্রেনে পরিণত হয়ে যায় তাহলে ব্রিটেনে আরো বেশি মানুষের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বাড়বে। সে ক্ষেত্রে ফাইজারের এই ভ্যাকসিনের খুব একটা ভাল কাজ করার সম্ভাবনা নেই। কারণ ল্যান্সারের রিপোর্ট জানাচ্ছে, আসল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই ফাইজারের ভ্যাকসিন যতটা বেশি কার্যকরী তার ৫ ভাগের ১ ভাগ মাত্র এই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর জন্য কার্যকরী। এছাড়াও, বয়স বেশি হলে শরীরে অ্যান্টিবডি পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে। সবকিছু মিলিয়ে এই নতুন ভ্যাকসিন নিয়ে চাপে সকলেই।