কিছুদিন আগেই ৬ জন ব্যক্তি দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন যাতে তারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁদের দাবী ছিল যে ধর্মের ভিত্তিতে কোন কল্যাণমূলক প্রকল্প থাকা উচিত নয়। এতে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ বঞ্চিত হয়। অবশ্য এর জবাবে কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে যে সংখ্যালঘুদের জন্য পৃথক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বেআইনি নয়, বরং আইনত সিদ্ধ। এই ধরনের প্রকল্প বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। স্পষ্টত, কেন্দ্রের মোদি সরকার (Narendra Modi Government) ওই জনস্বার্থ মামলার (PIL) বিরোধিতা করেছে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় যুক্তি হল এই প্রকল্পগুলি বিবিধের মাঝে মিলনের আদর্শ তুলে ধরে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেকেই আর্থিকভাবে অনগ্রসর। তাঁদের পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া শিশু, মহিলা, দুস্থ ব্যক্তিরা এই জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের আওতায় পড়ে যা সার্বিকভাবে তাদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সাহায্য করে। শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুযোগ, মনোভাবের বিকাশ এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
মোদি সরকারের হঠাৎ করে সংখ্যালঘু প্রীতি ইঙ্গিত দিচ্ছে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের প্রস্তুতি। বিজেপি তথা মোদি সরকার বারংবার সংখ্যালঘুদের বিমাতৃসুলভ আচারনের অভিযোগ জানিয়ে এসেছে। এক কথায় হিন্দুত্ববাদী দলের অপর নাম বিজেপি। বারংবার এই দলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ খবরের শিরোনামে এসেছে। তবে হঠাৎ করে সুপ্রিমকোর্টের মামলায় সংখ্যালঘু প্রীতি অনেককেই আশ্চর্য করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজেপির সাহায্য করতে পারে।
সেইসাথে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে মঞ্চে বসিয়ে তাঁর সরকারের ভূয়শী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, "করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় যোগী সরকার অতুলনীয় কাজ করেছে। সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য হয়েও দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোভিড পরীক্ষা হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। সবচেয়ে বেশি মানুষের টিকাকরণ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি, অক্সিজেনের যোগানের যোগী সরকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।" মোদির যোগী সরকারের প্রশংসা জাতীয় রাজনীতিতে যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আসলে করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে একাধিকবার যোগী সরকার সমালোচিত হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের নদীতে করোনা মৃত রোগীর দেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়েছে কাতারে কাতারে মানুষের। এতকিছুর পর দেশের প্রধানমন্ত্রী কি করে উত্তরপ্রদেশকে দরাজ সার্টিফিকেট দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।